রাজধানীসহ সারাদেশে আজ (শনিবার) সকাল থেকে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে। সকালে সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ঢাকা শিশু হাসপাতালে এই ক্যাম্পেইনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্য়ন্ত দেশের প্রায় আড়াইকোটি শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর টার্গেট নিয়ে এ প্রচারাভিযান শুরু হয়।
Advertisement
ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে অভিভাবকরা তাদের শিশুদের বিভিন্ন টিকাদান কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছেন। শূন্য থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুকে ১টি করে নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী শিশুকে ১টি করে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হচ্ছে।
গত ১৯ জানুয়ারি ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুলের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠার কারণে ওই দিনের প্রচারাভিযান স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে ৯ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পেইন পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়।
গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক প্রেস বিফ্রিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, শিশুদের নিরাপত্তার কথা ভেবে পুরোনো ক্যাপসুল বাদ দিয়ে নতুন ক্যাপসুল খাওয়ানো হচ্ছে।
Advertisement
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ছাত্র শিক্ষক ও সাংবাদিকসহ সকলের সার্বিক সহযোগিতায় দেশব্যাপী ১ লাখ ২০ হাজার স্থায়ী কেন্দ্রসহ অতিরিক্ত আরও ২০ হাজার ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রের মাধ্যমে এ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রগুলো বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট, ফেরিঘাট, ব্রিজের টোল প্লাজা, বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু ব্রিজ, দাউদকান্দি ও মেঘনা ব্রিজ, বিমানবন্দর, রেলস্টেশন, খেয়াঘাট ইত্যাদি স্থানে অবস্থান করবে। প্রতিটি কেন্দ্রে কমপক্ষে দুইজন প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবী দায়িত্ব পালন করবে।
ক্যাম্পেইন দিবসেই ভিটামিন ‘এ’ খাওয়ানো হবে। তবে দুর্গম এলাকা হিসাবে চিহ্নিত ১২টি জেলার ৪৬টি উপজেলার ২৪০টি ইউনিয়নে ক্যাম্পেইন পরবর্তী ৪ দিন (১০-১৩ ফেব্রুয়ারি) বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিশুদের সার্চিং কার্যক্রম পরিচালনা করে বাদ পড়া শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
শিশুদের ভরাপেটে কেন্দ্রে নিয়ে আসতে হবে। কাঁচি দিয়ে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুলের মুখ কেটে এর ভিতরে থাকা সবটুকু তরল ওষুধ চিপে খাওয়ানো হবে। জোর করে বা কান্নারত অবস্থায় ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না। ৬ মাসের কম বয়সী, ৫ বছরের বেশি বয়সী এবং অসুস্থ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ খাওয়ানো যাবে না।
উল্লেখ্য, শিশুদের রাতকানা ও অপুষ্টি দূর করতে ১৯৭৪ সাল থেকে এ ক্যাম্পেইন পরিচালিত হচ্ছে। যখন এই কার্যক্রম গ্রহণ করেন তখন ০৬-৫৯ মাস বয়সী শিশুদের মাঝে রাতকানা রোগের হার ছিল ৩.৭৬ শতাংশ। জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো অব্যাহত রাখার ফলে বর্তমানে ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবজনিত রাতকানা রোগের হার শতকরা ১ ভাগের নিচেই রয়েছে।
Advertisement
এমইউ/এমবিআর/এমএস