অশুভ শক্তি তাড়ানোর নাম করে ফুলমনি (৬০) নামে এক আদিবাসী নারীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাজশাহীর তানোরের মুণ্ডুমালা ‘সাধুজন মেরী ভিয়ারনী’ নামে এক গির্জায় মঙ্গলবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ফুলমনি মুণ্ডুমালা পৌর এলাকার মৃত ঝাদে মার্ডির স্ত্রী। পুলিশ এ ঘটনায় ওই গির্জার শিক্ষক বিলাসিসহ ৬ কিশোর-কিশোরিকে আটক করেছেন। আটকরা হলেন, রতন (১৮), ববি (২০), ফাল্গুনী (১৪), বর্ষা (১৩) এবং সম্পা (১৪)। নিহত ফুলমনির মেয়ে আরতি অভিযোগ করে বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে তার মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তার উপর অশুভ শক্তির প্রভাব আছে বলে ঝাঁড়ফুক করানোর জন্য গির্জায় নিয়ে আসা হয়। গির্জার ফাদার মাইকেল কোডাইয়া জানায় যে ফুলমনির শরীরে অশুভ শক্তি ভর করেছে। ওই গির্জার শিক্ষক বিলাসিকে নির্দেশ দেয়া হয় ফুলমনির শরীর থেকে অশুভ শক্তি দূর করতে। শুরু হয় ঝাঁড়ফুকের কাজ। বিলাসি তার সঙ্গে আরো ৫ জন কিশোর-কিশোরিকে নিয়ে ঝাঁড়ফুক শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা ৬ জন মিলে ফুলমনিকে মাটিতে ফেলে পা দিয়ে খুঁচতে থাকে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। এ ঘটনায় অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়লে মেয়ে আরতি ফুলমনিকে হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য গির্জার ফাদারের কাছে অনুরোধ করেন। কিন্তু তার কোনো কিছুই না শুনে সেইভাবেই চিকিৎসা চালিয়ে যেতে থাকে। এক পর্যায়ে রাত ১টার দিকে ফুলমনির মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আরতি পাশের মুণ্ডুমালা পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে মৌখিকভাবে অভিযোগ দিলে পুলিশ চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত ৬ জনকে আটক করে। তবে ঘটনার মূলহোতা গির্জার ফাদার মাইকেল কোডাইয়াকে পুলিশ আটক না করায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থল রাজশাহী সদর সার্কেল পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আব্দুর রশিদ পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে তানোর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে জানান, এ ঘটনায় ৬ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করতে চাইলে তা থানা গ্রহণ করে আইনগত ব্যবস্থা নেবে। শাহরিয়ার অনতু/এসএস/এমএস
Advertisement