রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) আয়োজিত ‘রিহ্যাব ফেয়ার ২০১৯’ শীর্ষক পাঁচ দিনব্যাপী আবাসন মেলায় চটকদার ও বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন দিচ্ছে র্যাংগস প্রপার্টিজ।
Advertisement
সরজমিন মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে র্যাংগস প্রপার্টির স্টলের ওয়ালে স্কল আকারে বারবার লেখা আসছে ‘৩৫ হাজারে ৮৫ লাখের ফ্ল্যাট’।
তবে স্টলটিতে দায়িত্বপালন করা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৩৫ হাজার টাকা দিলেই প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দিবে না। ফ্ল্যাট বুঝে নিতে গ্রাহকদের ৮৫ লাখ টাকায় পরিশোধ করতে হবে। তবে কিস্তিতে ফ্ল্যাট নিতে চাইলে ৩৫ হাজার টাকা থেকে ইএমআই (ইক্যুয়াল মান্থলি ইনস্টলমেন্ট) শুরু হবে। এ জন্যই ৩৫ হাজার টাকায় ৮৫ লাখ টাকার ফ্ল্যাট এমন বিজ্ঞাপন দেয়া হচ্ছে।
‘৩৫ হাজারে ৮৫ লাখের ফ্ল্যাট’ এই স্ক্রলের বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাংগস প্রপার্টির ডেপুটি ম্যানেজার (মার্কেটিং) সাফকাত রহমান বলেন, গ্রাহককে ৩৫ হাজার টাকায় ৮৫ লাখ টাকার ফ্ল্যাট দিচ্ছি বিষয়টি কিন্তু তা নয়। গ্রাহকে ফ্ল্যাটের সম্পূর্ণ মূল্যই পরিশোধ করতে হবে। তবে গ্রাহক সর্বনিম্ন ৩৫ হাজার টাকা ইএমআই সুবিধা পাবেন।
Advertisement
তিনি বলেন, ইএমআই সুবিধার আওতায় আমরা ‘ফ্লেক্সি প্ল্যান’ এবং ‘স্টেপ আপ’ নামে দু’টি প্যাকেজ দিচ্ছি। এর মধ্যে ফ্লেক্সি প্ল্যান প্যাকেজে ফ্ল্যাট কিনতে হলে বুকিংয়ে ফ্ল্যাটের মূ্ল্যের ২০ শতাংশ পরিশোধ করতে হবে। বাকি টাকা সর্বোচ্চ ৩৬০টি কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ইএমআই শুরু হবে সর্বনিম্ন ৩৫ হাজার থেকে। ইএমআইয়ের টাকা গ্রাহকদের লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে।
আর স্টেপ আপ প্যাকেজের ফ্ল্যাট কিনলে গ্রাহককে ইএমআইয়ের টাকা পরিশোধ করতে হবে স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের মাধ্যমে। এ ক্ষেত্রে বুকিংয়ের সময় ফ্ল্যাটের মূ্ল্যের ৩০ শতাংশ মূল্য গ্রাহকদের পরিশোধ করতে হবে। ফ্ল্যাট হস্তান্তরের আগে সব থেকে কম ইএমআই হবে ৩৫ হাজার টাকা। এই প্যাকেজে গ্রাহকরা সর্বোচ্চ ৩০০ ইএমআই সুবিধা পাবেন।
এ কর্মকর্তা বলেন, ফ্ল্যাট বুকিংয়ের সময় আমরা গ্রাহককে কিচেন ইন্টেরিয়র সলিউশন, কার পার্কিং স্পেস এবং জিক্সার এসএফ বাইক এ তিনটির যে কোনো একটি ফ্রি দিচ্ছি। রিহ্যাব মেলা উপলক্ষে এ অফার ফেব্রুয়ারি জুড়েই থাকবে।
৩৫ হাজারে ৮৫ লাখের ফ্ল্যাট এমন লেখা দেখে র্যাংগসের স্টলে যান আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, স্টলের ওয়ালে বার বার লেখা উঠছে ৩৫ হাজারে ৮৫ লাখ টাকার ফ্ল্যাট। লেখাটা এমনভাবে ভেসে উঠছে- দেখে মনে হবে ৮৫ লাখ টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট তারা ৩৫ হাজার টাকায় দিচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন।
Advertisement
‘স্টলের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম ফ্ল্যাটের সম্পূর্ণ মূল্যই পরিশোধ করতে হবে। এমনকি অর্থলগ্নীকারি প্রতিষ্ঠানের সুদ হার বিবেচনায় নিলে ফ্ল্যাটের মূল্য ৮৫ লাখ টাকাও ছাড়িয়ে যেতে পারে। সুতরাং এ ধরনের চটকদার বিজ্ঞাপন এক ধরণের প্রতারণা-বলেন আরিফুল।
এমএএস/এএইচ/এমএস