রাজধানীজুড়ে বেশ জোরেশোরে এগিয়ে চলছে স্বপ্নের মেট্রোরেল প্রকল্পের মূল কাজ। ইতোমধ্যে চূড়ান্তও হয়ে গেছে মেট্রোরেলের লোকোমোটিভ ডিজাইন। সে মোাতাবেক জাপানের সংশ্লিষ্ট কোম্পানির কারখানায় লোকোমোটিভের মক-আপ বা রেপ্লিকা তৈরি হয়েছে।
Advertisement
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা আবু নাছের টিপু জাগো নিউজকে বলেন, ইতোমধ্যেই মেট্রোরেলের লোকোমোটিভের ডিজাইন চূড়ান্ত করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। ওই ডিজাইনের ভিত্তিতে জাপাানের সংশ্লিষ্ট কোম্পানির কারখানায় লোকোমোটিভের মক-আপ বা রেপ্লিকা তৈরি করা হয়েছে। রেপ্লিকার ছবিও আমরা পেয়েছি। শিগগিরই একটি প্রতিনিধি দল রেপ্লিকাটি দেখতে যাবেন। এবং মেট্রোরেলের লোকোমোটিভে যেসব সুযোগ-সুবিধা থাকার কথা রয়েছে সেগুলো ঠিক থাকলে চূড়ান্ত লোকোমোটিভ তৈরির জন্য বলা হবে।
বর্তমান সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যেসব বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চায়, সেগুলোকে ‘ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। এই ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের অন্যতম মেট্রোরেল। এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা।
ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের পরিচালনা পরিষদের ১১তম সভায় সম্প্রতি ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের (এমআরটি-৬) বাস্তবায়ন অগ্রগতি তুলে ধরা হয়। প্রকল্পটি ‘মেট্রোরেল প্রকল্প’ নামেই বেশি পরিচিত।
Advertisement
অগ্রগতি প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছরের আগস্ট মাস পর্যন্ত এই প্রকল্পের সার্বিক বাস্তব অগ্রগতি সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর প্রকল্পের সার্বিক আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ২৩ দশমিক ২২ শতাংশ। ১২০ মিটার উড়ালপথ (ভায়াডাক্ট) দৃশ্যমান হয়েছে। সংশোধিত পরিকল্পনা অনুযায়ী মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।
২০১২ সালে এমআরটি-৬ বা মেট্রোরেল প্রকল্প নেয়া হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় বিশেষ উদ্যোগে সংশোধিত পরিকল্পনা নেয়া হয়।
উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত উড়ালপথ ও স্টেশন নির্মাণের কাজ শেষ করার কথা ২০১৯ সালের জুনে। চালু হওয়ার কথা ওই বছরের ডিসেম্বরে।
মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ আটটি প্যাকেজে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম প্যাকেজের আওতায় ডিপো এলাকার ভূমি উন্নয়নের কাজ সবার আগে শুরু হয়। এই প্যাকেজের কাজ গত ৩১ জানুয়ারি শতভাগ শেষ হয়েছে। আর বিরতিতে ট্রেন রাখার স্থান, ট্রেন মেরামত ও মালামালের গুদাম, প্রধান ওয়ার্কশপসহ নানা অবকাঠামো নির্মাণকাজের বাস্তব অগ্রগতি ১৭ শতাংশ।
Advertisement
উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার উড়ালপথ ও ৯টি স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে প্যাকেজ ৩ ও ৪-এর আওতায়। পরে এই উড়ালপথের ওপরই ট্রেনের জন্য লাইন বসানো হবে। এই প্যাকেজের কাজ আগামী বছরের জুনের মধ্যে শেষ করতে হবে। এ বছরের আগস্ট পর্যন্ত এই প্যাকেজের অগ্রগতি ১৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রকল্প চালু হলে প্রতি ৪ মিনিট পরপর ১ হাজার ৮০০ যাত্রী নিয়ে চলবে মেট্রোরেল। ঘণ্টায় চলাচল করবে প্রায় ৬০ হাজার যাত্রী। প্রায় ২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগবে ৪০ মিনিটের কম। মেট্রোরেল প্রকল্পে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা বসানোর কাজে বাস্তব অগ্রগতি ১ শতাংশ। ইতোমধ্যে প্রথম মেট্রোট্রেনের সামনের ও পেছনের নকশা এবং বাইরের রং চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে লাল-সবুজের প্রাধান্য রয়েছে।
এমইউএইচ/এমবিআর/পিআর