রাজস্ব আদায়ে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করলে ব্যবসায়ীরা যেভাবে চাইবেন সেভাবেই তাদেরকে সহযোগিতা করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৃহস্পতিবার শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যবসা ও শিল্প-বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে করণীয় নির্ধারণ করতে প্রথম পর্বের ধারাবাহিক আলোচনায় বসেন অর্থমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। আলোচনা শেষে অর্থমন্ত্রী এই মন্তব্য করেন।
Advertisement
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর সঙ্গে আমরা ফলপ্রসূ আলোচনা করেছি। কার কী সমস্যা আমরা শুনেছি। তাদের একটা অভিযোগ হলো-আমরা প্রত্যেক বছর তাদেরকে আশ্বস্ত করি, কিন্তু ফাইনালি সেগুলো বাস্তবায়ন করি না। তবে এবার আমরা তাদেরকে বলেছি, আমরা এগুলো বাস্তবায়ন করব।’
তিনি বলেন, ‘আমরা তাদেরকে যে কথা বলার চেষ্টা করেছি, আমাদের কথা হচ্ছে, কাউকে কষ্ট না দেয়া। কাউকে কষ্ট না দিয়ে আমরা কীভাবে আমাদের রাজস্ব অর্জন করতে পারি, সেই বিষয়টি বলেছি।’
রাজস্ব বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘রেভিনিউ (রাজস্ব) আমাদের বাড়াতে হবে, কারণ সরকারের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। আগামীতে চাহিদা আরও অনেক বাড়বে। সেটা মোকাবেলা করার জন্য রাজস্ব আহরণ ছাড়া আর কোনো হাতিয়ার নেই। রাজস্ব আহরণ করার জন্য আমরা যাব, তারা (ব্যবসায়ীরা) পরিশোধ করবে।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘আমরা গেলাম তারা দিল না, তাহলে রাজস্ব আহরণ হবে না। আমি তাদেরকে কথা দিয়েছি, তাদের সমস্যা আমরা শুনব, আমাদের যে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা আছে, সেটা তারা পূরণ করবে। আমাদের এ বছর রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ২ লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকা। আপনারা (ব্যবসায়ীরা) আমাদের চাহিদা পূরণ করেন আর আপনারা যেভাবে চাইবেন, আমরা সেভাবে আপনাদের সহযোগিতা করব।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা একটা উইন উইন সিচুয়েশনে যাচ্ছি, তারাও জিতবে আমরাও জিতব। এই মানসিকতা নিয়ে আমরা বসেছিলাম।’
‘আজকে আশা করি, কোনো ব্যবসায়ীই অভিযোগ করবেন না যে, তারা আমাদের কাছে এসেছেন আর আমরা তাদেরকে সাহায্য-সহযোগিতার হস্ত প্রসারিত করি নাই’-যোগ করেন অর্থমন্ত্রী।
ঋণখেলাপিদের বিষয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আমি বলছি, আর খেলাপি ঋণ বাড়বে না। আমি যেদিন বলছি, এরপর আর বাড়বে না। যদি বেড়ে থাকে তাহলে বলেন যে, বাড়ছে। ডেইলি বেসিসে তো আর খেলাপিঋণ বের করা যায় না। খেলাপিঋণ বের করতে হলে ছয় মাস বা এক বছর লাগবে।’
Advertisement
আলোচনায় অংশ নেয়া ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, অর্থ বিভাগ, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ অথরিটি, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, এফবিসিসিআই, বাংলাদেশ ইন্সুরেন্স অ্যাসোসিয়েশেন, বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতি, ডিসিসিআই, এমসিসিআই, রিহ্যাব, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ, লেদার গুডস অ্যান্ড ওয়ার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বারর্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ এগ্রো ফিড ইনগ্রেডিয়েন্টস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, ঢাকা স্টক একচেঞ্জ, আইসিএমএবি, বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন, আইসিএসবি, ডিএসই ব্রোকার অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজ।
এসআর/এমকেএইচ