খেলাধুলা

বিতর্কিত চিঠি : মোহামেডানের কাছে ক্ষমা চেয়েছে হকি ফেডারেশন

প্রিমিয়ার হকি লিগ চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে ট্রফি গ্রহণের জন্য যে বিতর্কিত আমন্ত্রণপত্র দিয়েছিল বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন, সেটি প্রত্যাহার করে নতুন আমন্ত্রণপত্র দিয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছে ফেডারেশন।

Advertisement

আজ (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা সাতটায় তেজগাওয়ের বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ফ্যালকন হলে প্রিমিয়ার হকি লিগে চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ হওয়া দলকে ট্রফি প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে ফেডারেশন।

এর আগে আজ দুপুরে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে সংশোধনী আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে মোহামেডান ক্লাবকে। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, 'আগে প্রেরিত পত্রখানা হুবহু বাতিল করা হলো এবং আমাদের দফতর হতে অসাদবধানতাবশত আপনার নিকট প্রেরিত হওয়া পত্রটির জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। উল্লিখিত বিষয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করছি এবং পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আপনাদের উপস্থিতি কামনা করছি।'

তবে এ চিঠি পাওয়ার পর মোহামেডান ট্রফি গ্রহণ করতে যাবে কি-না সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।

Advertisement

এ চিঠির পটভূমি মূলত গত বছর ৭ জুনের মোহামেডান-মেরিনার্সের ম্যাচটি। ঘটনাবহুল সে ম্যাচে ৪৪ মিনিট পর দুই চাইনিজ আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র গন্ডগোল হলে ম্যাচ আর শেষ হয়নি। ৩০ অক্টোবর ওই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন। ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র ঘোষণা করলে চ্যাম্পিয়ন হয় মোহামেডান। আর রানার্সআপ আবাহনী।

তারও প্রায় এক মাস পর গত ২৬ নভেম্বর হকি ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির সভায় শাস্তি দেয়া হয় মোহামেডান ও মেরিনার ইয়াংসের চার কর্মকর্তাকে। তাদেরকে বিভিন্ন মেয়াদে হকিতে নিষিদ্ধ করে ফেডারেশন। সঙ্গে জরিমানাও। ফেডারেশনের ওই সিদ্ধান্তের পরই হকিতে নেমে আসে অন্ধকার। সে ঝামেলা না মিটিয়েই ফেডারেশন চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলকে ট্রফি প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়।

মজার বিষয় হলো, চ্যাম্পিয়ন মোহামেডানকে ট্রফি প্রদান অনুষ্ঠানে যে আমন্ত্রণপত্র দেয়া হয়েছে সেখানে নিষিদ্ধ কর্মকর্তাদের অনুষ্ঠানে না আসার কথা উল্লেখ আছে। আমন্ত্রণপত্রে লেখা হয়েছে (হুবহু), ‘উক্ত অনুষ্ঠানে আপনার ক্লাবের চ্যাম্পিয়ন পুরস্কার ও আর্থিক অনুদান গ্রহণের জন্য সর্বমোট ১০ জনকে উপস্থিত থাকার জন্য বিনীত আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। এখানে উল্লেখ্য যে, ফেডারেশনের মাননীয় সভাপতি মহোদয়ের পরামর্শক্রমে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন কর্তৃক চলমান শাস্তিপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা/খেলোয়াড়কে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ না করার পরামর্শ দিয়েছেন।’

আমন্ত্রিত অতিথির সংখ্যা ১০ জনে নির্ধারণ করে দেয়া এবং আমন্ত্রণপত্রে শাস্তিপ্রাপ্তদের উপস্থিত না হওয়ার নির্দেশনা দেয়ার বিষয়টি মর্যাদায় লেগেছে চ্যাম্পিয়ন মোহামেডানের। এ বিষয়টিকে সহজভাবে নিতে পারেনি মোহামেডান। ট্রফি নেয়ার চিঠি পাওয়ার পর যেখানে চ্যাম্পিয়ন দলের আনন্দে উদ্বেলিত হওয়ার কথা সেখানে হয়েছে উল্টোটা। হকি ফেডারেশনের এ ধরনের চিঠিকে মর্যাদাহানিকর হিসেবে উল্লেখ করে ট্রফি প্রদান অনুষ্ঠান বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোহামেডান।

Advertisement

মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ডাইরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেন ভুঁইয়া জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, ‘ফেডারেশন এ ধরনের আমন্ত্রণপত্র দিয়ে আমাদের মর্যাদাহানি করেছে। আমরা এমন অনুষ্ঠানে যেতে পারি না।’

হকি দলে ২০ খেলোয়াড় ও কোচ-কর্মকর্তা মিলে থাকেন ২৪ জন। অথচ চ্যাম্পিয়ন দলকে ট্রফি আনতে যেতে হবে ১০ জনকে। হকি অঙ্গনের সবাই ফেডারেশনের এমন সিদ্ধান্তকে হাস্যকর হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অতিথি ১০ জনে বেঁধে রাখলে ক্লাব কাকে পাঠাবে অনুষ্ঠানে? যারা খেলে ক্লাবকে ট্রফি এনে দিলেন তারা ট্রফি আনতে যেতে পারবেন না?-এ প্রশ্ন এখন হকি অঙ্গনে। এই ২৪ জনের বাইরে ক্লাবের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, হকি কমিটির চেয়ারম্যান, সম্পাদক, লিগ কমিটিতে ক্লাবের প্রতিনিধিও আমন্ত্রণ পাওয়ার যোগ্য। অথচ ফেডারেশন বলেছে সর্বোচ্চ ১০ জন!

আরআই/এসএএস/আরআইপি