অপচয় ব্যক্তি সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। হালাল কাজে চাহিদার বেশি খরচ করাকে অপচয় বলা হয়। যা কুরআনের ভাষায় ‘ইসরাফ’ বলা হয়। তাইতো কুরআনে অপচয়কে শয়তানের কাজ বলা আখ্যায়িত করা হয়েছে। অপচয়ের দিকগুলো জাগো নিউজের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-অপচয় : অপচয় একটি গর্হিত কাজ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তোমাদের জন্য তিনটি বস্তু অপছন্দ করেন- ১. অনর্থক এবং বাজে কথা বলা, ২. নিষ্প্রয়োজনে মাল নষ্ট করা এবং ৩. অত্যধিক প্রশ্ন করা।’(বুখারি)ক. পানির অপচয়- বিনা প্রয়োজনে পানি ব্যয় করা অন্যায়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তুমি যদি সাগরপাড়ে বসেও পানি অতিরিক্ত ব্যবহার করো, তাও অপচয় হবে।খ. খাওয়া দাওয়া- প্লেটে খাবার নিয়ে ফ্যাশন বা সৌজন্যবোধ মনে করে ইচ্ছাকৃতভাবে খাবার না খাওয়া। আল্লাহ কুরআনে এরশাদ করেন, ‘এবং তোমরা আহার করো ও পান করো। কিন্তু অপচয় করো না। তিনি অপচয়কারীকে পছন্দ করেন না।’ (সূরা আ’রাফ : আয়াত ৩১)গ. গ্যাসের অপচয়- গ্যাসের মিটার পদ্ধতি না থাকায় দেশের সবচেয়ে বেশি অপচয় হচ্ছে গ্যাস। মাসভিত্তিক বিলের কারণে এ অপচয়ের মাত্রা মহামারীর আকার ধারন করেছে। মনে রাখতে হবে, গ্যাস প্রাকৃতিক সম্পদ, বান্দার জন্য অল্লাহর অপার অনুগ্রহ।ঘ. বিদ্যুতের অপচয় : লোডশেডিংয়ের মাঝেও আমরা বিদ্যুতের মারাত্মক অপচয় করি। বিশেষ করে অফিস-আদালত, কোয়াটার, রাস্তা-ঘাট, টয়লেটসহ অপ্রয়োজনীয় স্থানে সবসময় বিদ্যুতের অপচয় হয়। বিশেষ করে কোনো দিবস বা অনুষ্ঠান হলে আলোকসজ্জা, লাইটিংয়ের নামে বিদ্যুতের অপচয় আমাদের জাতীয় জীবনে বিদ্যৎ সংকট মহামারীর আকার ধারণ করেছে। যা রোধ করা সবার নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য।ঙ. সাজসজ্জা ও সৌন্দয্যবর্ধন- শারিরীক সৌন্দর্য বর্ধনে পোশাকের নামে আমরা যে সব পোশাক ক্রয় করে থাকি, তার ক্ষতির দিকগুলোই বেশি। একদিকে যেমন আর্থিক অপচয়, অন্যদিকে আল্লাহর বিধানের লংঘন। আরামদায়ক ও স্বাস্থ্যসম্মত বিষয়গুলো না ভেবে বেশি দামে পোশাক ও প্রসাধনী ক্রয়ে প্রতিযোগিতাও সীমাহীন অপচয় হয়। যা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।
Advertisement
করণীয়...সুতরাং আমাদের উচিত মধ্যম পন্থ্যা অবলম্বন করা। অপচয়ের বিষয়ে আমাদের করণীয় কি হবে তা আল্লাহ তাআলা কুরআনে নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন- ‘এবং যখন তারা ব্যয় করে তখন তারা অপচয় করে না, কাপর্ণ্যও করে না বরং তারা আছে এতদুভয়ের মাঝে মধ্যম পন্থায়।’ (সূরা ফোরকান : আয়াত ৬৭)। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে অপচয় করা থেকে হেফাজত করুন। বাস্তবজীবনে ইসলামের প্রতিফলন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।জাগোনিউজ২৪.কমের সঙ্গে থাকুন। সুন্দর সুন্দর ইসলামি আলোচনা পড়ুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।এমএমএস/এমএস