আন্তর্জাতিক

সু চিকে বহনকারী সেনা হেলিকপ্টারের জরুরি অবতরণ

মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নেত্রী ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিকে বহনকারী দেশটির সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার জরুরি অবতরণ করেছে। হেলিকপ্টারের হাইড্রলিক ফ্লুইড লিকের কারণে জরুরি অবতরণ করা হয় বলে দেশটির ইংরেজি দৈনিক দ্য ইরাবতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।

Advertisement

ইরাবতি বলছে, বুধবার দেশটির পূর্বাঞ্চলের শান প্রদেশের মং তন শহরের তা সেং সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি। মং স্যাত শহরে হেলিকপ্টারটি জরুরি অবতরণ করতে বাধ্য হয়।

স্টেট কাউন্সিলর অফিসের মুখপাত্র ইউ জ্য হতেই বলেন, ‘হেলিকপ্টারটি জরুরি অবতরণের সিদ্ধান্ত নেয়ায় পাইলটকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন অং সান সু চি।’ তিনি বলেন, ‘অং সান সু চি সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞ; যারা এই হেলিকপ্টার পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। বিশেষ করে পাইলট, যিনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’

আরও পড়ুন : মিয়ানমারের পার্লামেন্টে সেনাবাহিনীর ব্যাপক ক্ষোভ

Advertisement

‘এ ধরনের পরিস্থিতিতে অবতরণ নিরাপদ হবে কি-না সেটি পুরোপুরি নির্ভর করে পাইলটের ওপর। তার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল এবং প্রত্যাশা অনুযায়ী হেলিকপ্টারটি নিরাপদে অবতরণ করেছে।’ সু চিকে বহনকারী ওই হেলিকপ্টারের জরুরি অবতরণের পর আরো দুটি হেলিকপ্টার মং তন শহরে উড়ে যায়।

মং তন শহর শাখার এনএলডির চেয়ারম্যান ইউ তিন খিয়াং বলেন, ‘হেলিকপ্টারটি উড্ডয়নের পরপরই হাউড্রলিক লিক ধরা পড়ে। যে কারণে পাইলট তাৎক্ষণিকভাবে হেলিকপ্টারটি অবতরণের সিদ্ধান্ত নেন। পরে অন্য একটি হেলিকপ্টারে করে অনুষ্ঠানস্থলে যান অং সান সু চি।’

দেশটির কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণ, ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক মন্ত্রী ইউ উইন মিয়াত আয়ে বলেন, ‘মিয়ানমার সরকারের নিজস্ব কোনো হেলিকপ্টার নেই। যে কারণে স্টেট কাউন্সিলরের ওই সফরের জন্য হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করতে সেনাবাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছিল।’

আরও পড়ুন : সেনাবাহিনীর মুখোমুখি অং সান সু চি

Advertisement

গত বছরের আগস্টে ম্যাগউই অঞ্চলের পাকোক্কু শহরে এক সফরে যাওয়ার জন্য বেসরকারি মালিকানাধীন একটি কোম্পানি থেকে হেলিকপ্টার ভাড়ায় নিয়েছিলেন সু চি। স্টেট কাউন্সিলর কার্যালয়ের মুখপাত্র জ্য হতেই বলেন, ওই সফর ব্যক্তিগত হওয়ায় সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টার ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সু চি।

উল্লেখ্য, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর রচিত সংবিধানের সংশোধনী প্রস্তাব পার্লামেন্টে অনুমোদন ঘিরে ব্যাপক তোপের মুখে রয়েছে সু চির নেতৃত্বাধীন দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। বুধবার পার্লামেন্টের সংরক্ষিত সেনাবাহিনীর সদস্যদের তোপ উপেক্ষা করেই দেশটির সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে।

আরও পড়ুন : নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে মিয়ানমার সেনাবাহিনী

সেনাবাহিনীর ক্ষমতাকে কার্যত চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলা পার্লামেন্টে বুধবারের ভোটাভুটিতে সেনাবাহিনীর সংসদ সদস্যরা বিরোধিতা করলেও তা ধোপে টিকেনি। পার্লামেন্টে সংবিধান সংশোধনী কমিটির ওপর যখন ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়, তখন সেনাবাহিনীর সংরক্ষিত আসনের এমপিরা দাঁড়িয়ে কয়েক মিনিট নীরবতা পালন করেন; যা মূলত ওই ভোটাভুটির বিরোধিতা করেই।

সূত্র : দ্য ইরাবতি।

এসআইএস/জেআইএম