১৯৬৬ সালের জানুয়ারি মাসে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে যাত্রা শুর হয় আন্তর্জাতিক কুরআন তিলাওয়াত সংস্থা ইক্বরার। এটি বিশ্বের ইতিহাসে সর্বপ্রথম ‘ইত্তেহাদুল কুররা’ অর্থাৎ বিশ্বের প্রসিদ্ধ ক্বারিদের সংগঠন। যার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ছিল আরব বিশ্বের পাশাপাশি সমগ্র এশিয়া মহাদেশে (বিশেষ করে উপমহাদেশে) বিশুদ্ধ কুরআন তিলাওয়াত ও ইলমে ক্বিরাতের ব্যাপক প্রচলন করা।
Advertisement
প্রতিষ্ঠাকালীন ‘ইক্বরা’র সভাপতি মনোনীত হন মিসরের তত্কালীন শাইখুল কুররা শাইখ মাহমুদ খলিল আল হুসারি (রহ.) এবং মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পান পাকিস্তানের ক্বারি জাহের কাসেমি (রহ.)। যিনি দারুল উলুম দেওবন্দের দীর্ঘ সময়ের মুহতামিম মাওলানা ক্বারি তৈয়ব সাহেবের (রহ.) ভাতিজা।
‘ইক্বরা’র কার্যকরী সদস্য হিসেবে মনোনীত হন মিসরের বিশ্ববিখ্যাত ক্বারি শাইখ আবদুল বাসেত মুহাম্মাদ আবদুস সামাদ (রহ.), বাংলাদেশের শাইখুল কুররা মাওলানা ক্বারি মুহাম্মাদ ইউসুফ (রহ.), ইয়েমেনের উস্তাদ শাইখ মুহাম্মাদ আলী শরফুদ্দীন (রহ.) প্রমুখ।
প্রতিষ্ঠার বছরেই ‘ইক্বরা’র প্রথম আন্তর্জাতিক ক্বিরাত সম্মেলন তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় সম্মেলন পরবর্তী বছর ১৯৬৭ সালের জানুয়ারি মাসে ঢাকার ঐতিহাসিক পল্টন ময়দান, চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা, সিলেটের আলিয়া মাদরাসা এবং পাকিস্তানের করাচি, রাওয়ালপিন্ডি ও পেশাওয়ারে অনুষ্ঠিত হয়।
Advertisement
১৯৬৭ সালের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক ক্বিরাত সম্মেলনের পর কিছু রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ‘ইক্বরা’র কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের ইন্তেকালের পর সংস্থার কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। এরপর মাওলানা ক্বারি মুহাম্মাদ ইউসুফ (রহ.) এই সংগঠনের হাল ধরেন। তিনি ১৯৬৬ সালে সংগঠিত ঐতিহাসিক ৬-দফা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অন্যতম সহচর ও সংগঠক ছিলেন। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাকে বাংলাদেশের প্রধান ক্বারি তথা শাইখুল কুররা নিযুক্ত করেন। স্বাধীনতার ২০ বছর পর ১৯৯১ সালে শাইখুল কুররা ক্বারি মুহাম্মাদ ইউসুফ (রহ.) নতুন উদ্যমে ‘ইক্বরা’র কার্যক্রম বাংলাদেশে শুরু করতে সক্ষম হন।
এ সংস্থার অধীনে বাংলাদেশের সর্বপ্রথম ও একমাত্র স্বতন্ত্র ইলমে ক্বিরাতের প্রতিষ্ঠান ‘মা’হাদুল ক্বিরাত বাংলাদেশ’ পরিচালিত হচ্ছে। আগামীকাল শুক্রবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম চত্বরে ইক্বরা’র আয়োজনে এবং পিএইচপি ফ্যামিলির পৃষ্ঠপোষকতায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ১৯তম আন্তর্জাতিক ক্বিরাত সম্মেলন।
লেখক : শাইখ আহমাদ বিন ইউসুফ আল আযহারী হাফিযাহুল্লাহ; সভাপতি, আন্তর্জাতিক কুরআন তিলাওয়াত সংস্থা (ইক্বরা)।
বিএ
Advertisement