অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণদের জাগ্রত করতে ও জঙ্গিবাদবিরোধী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে প্রায় এক বছর ধরে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেমিনার করে আসছে সুচিন্তা ফাউন্ডেশন। ‘জাগো তারুণ্য রুখো জঙ্গিবাদ’ শিরোনামে সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের জঙ্গিবাদবিরোধী কার্যক্রমের এবারের সেমিনারটির আয়োজন করা হয়েছে রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে।
Advertisement
এবারের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সাংসদ সাবিনা আক্তার তুহিন। তিনি বলেন, ‘৭ বছর বয়সে কোরআন শিক্ষা নিয়েছি, বাংলায় পড়েছি। কোথাও বলা হয়নি-মানুষ হত্যা করা সওয়াবের কাজ। বরং এটা বলা হয়েছে-মানুষ হত্যা মহাপাপ।’
সাংসদ সাবিনা আক্তার তুহিন বলেন, ‘ভ্রান্ত আর্দশের ওপর ভর করে তরুণরা জঙ্গি হয়ে ওঠে। আর এই আদর্শ ছড়িয়ে দিচ্ছে কতিপয় গোষ্ঠী। ধর্মের নামে তরুণদের মিথ্যা ধর্মীয় ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করে নিচ্ছে। ধর্মের দোহাই দিয়ে আমাদের চোখে কালো পতাকা এঁকে দিতে চায়। কিন্তু আমরা সতর্ক। লাল-সবুজের এই বাংলাদেশে কোনো অপশক্তি কোনোদিন জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করতে পারবে না।’
Advertisement
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চিত্রনায়িকা নিপুন। তিনি বলেন, ‘আমরা আজকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটস অ্যাপে চ্যাট করে অনেক বেশি সময় দিয়ে থাকি। যার ফলে পরিবার মা-বাবা, ভাই-বোনের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়ে যাচ্ছে। সেখান থেকেই ঘটে যাচ্ছে নানা অঘটন। তরুণদের টার্গেট করে এই সোশ্যাল মিডিয়াগুলোর মাধ্যমে মিথ্যা ধর্মীয় ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে তরুণদের জড়ানো হচ্ছে জঙ্গিবাদের মতো ভয়ঙ্কর জগতে। নানাভাবে ‘ব্রেনওয়াশ’ করে এক একজন তরুণকে আত্মঘাতী হিসেবে তৈরি করছে।’ ভালো কাজে সোশ্যাল মিডিয়া কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাও নিয়মিত জঙ্গিবাদবিরোধী নানা লেসন দিয়ে শিক্ষার্থীদের সচেতন করে তুলতে পারেন। আমরা ছোটবেলা যেভাবে কাটিয়েছি এখন বদলে গেছে। সবসময় ভালোর সঙ্গে থাকলে একজন ভালো মানুষ হওয়া অনেক সহজ। দেশটাকে নিরাপদ, সুন্দর, মাদক ও জঙ্গিবাদমুক্ত রাখার দায়িত্ব আমাদের সকলের।’
অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের ডিরেক্টর ও এই কার্যক্রমের সমন্বয়ক কানতারা খান। শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ধর্ম প্রত্যেকের ব্যক্তিগত বিশ্বাস এবং অধিকার। সেই বিশ্বাস ও অনুভূতির জায়গাটিতে গোষ্ঠীরা আঘাত করছে ক্ষমতা ও বাণিজ্যিক স্বার্থের লোভে। যার সঙ্গে ধর্মের আ-দৌ কোনো সম্পর্ক নেই।’
Advertisement
বক্তব্য রাখেন সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এন এম মেশকাত উদ্দীন। তিনি বলেন, ‘বর্তমান বিশ্ব তারুণ্যের ওপর নির্ভরশীল। এই তরুণরাই একটি জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে আবার একটি জাতি ধ্বংসের জন্য তরুণরাই যথেষ্ট। তাই তরুণ প্রজন্মকে সচেতন হওয়া জরুরি। কেননা এই তারুণ্যের শক্তিতে সন্ত্রাসবাদের কাজে লাগিয়ে একটি মহল ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতে চায়। তাই কারও ভুল প্ররোচনা থেকে সাবধান থাকতে হবে।’ সুচিন্তা’র গবেষণা সেলের পক্ষ থেকে আশরাফুল আলম শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর প্রদানের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মে জঙ্গিবাদ সমর্থন-অসমর্থন বিষয়ে তার যুক্তি তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আজ সারাবেলা’র সম্পাদক জববার হোসেন।
এসআর/এমকেএইচ