নিজ দেশের ক্রিকেট দলের দায়িত্ব নেবেন বলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে চুক্তির সময় পুরোটা শেষ না করেই দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। কিন্তু তিনি শ্রীলঙ্কান দলের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে যেনো ঘোর অমানিশায় ডুবে গিয়েছে লঙ্কান ক্রিকেট।
Advertisement
পরিসংখ্যান বলছে ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে এখনো পর্যন্ত তিন ফরম্যাট মিলে মোট ৪৩টি ম্যাচ খেলা শ্রীলঙ্কা জয় পেয়েছে মাত্র ১৪ ম্যাচে, হেরেছে ২৫টিতে। টেস্ট, ওয়ানডে কিংবা টি-টোয়েন্টি; ফরম্যাটভেদে কোনোটিতেই পঞ্চাশ শতাংশ ম্যাচও জেতা হয়নি হাথুরুসিংহের শিষ্যদের।
সবশেষ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে পাত্তাই পায়নি শ্রীলঙ্কা। প্রথম ম্যাচে ইনিংস ব্যবধানে হারের পর, দ্বিতীয় ম্যাচে পরাজয়ের ব্যবধানটা ৩৬৬ রানের। সাম্প্রতিক সময়ে এমন পারফরম্যান্সের কারণে দেশের ক্রিকেট নিয়ে আশা করাই ছেড়ে দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার সাবেক অধিনায়ক মারভান আতাপাত্তু।
১৮টি টেস্ট ও ৬৩টি ওয়ানডেতে লঙ্কান ক্রিকেট দলকে নেতৃত্ব দেয়া আতাপাত্তু মনে করছেন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে তার দেশের ক্রিকেট। কেননা অন্ধকার টানেলের মাঝে দাঁড়িয়ে অন্ধকারব্যতীত কিছুই দেখছেন না তিনি।
Advertisement
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আতাপাত্তু বলেন, ‘সত্যি বলতে আমি হয়তো বলতে পারতাম যে আমরা খারাপ সময়ের মধ্যে আছি। কিন্তু বাস্তবতা হলো আপনি যখন অন্ধকার সুড়ঙ্গে থাকেন তখন সামনেই আলোকছটা দেখতে পান। কিন্তু যেভাবে আমাদের ক্রিকেট যেভাবে এগুচ্ছে তাতে করে আমি সামনে ঘোর অন্ধকারব্যতীত কিছুই দেখতে পারছি না।’
এমনটা বলার কারণ ব্যাখায় আতাপাত্তু জানান, ‘এমনটা হওয়ার বেশ কিছু কারণও রয়েছে। সমস্যাগুলো দলের মধ্যে রয়েছে, দলের বাইরে থেকে আসছে। কখনো পরিকল্পনা ঠিক হচ্ছে না। আবার দেখা যাচ্ছে বাইরে থেকে কতিপয় ব্যক্তি ক্রিকেট বোর্ডে ঢুকতে তদবির চালাচ্ছে। এদের সবার আবার আলাদা এজেন্ডা রয়েছে। আমি মনে করি আপনার কাছে কোটি কোটি পরিকল্পনা থাকতে পারে, তবে সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হলে সঠিক জায়গায় তা জানাতে হবে। আজকে কিছু করে আগামীকালকেই যদি বলতে হয় যে কাজটা ভালো হয়নি, তাহলে আমি বলবো এটা কোনো ভালো লক্ষণ নয়।’
তবে কি নিজ দেশের ক্রিকেটের এপিটাফ ধরেই নিচ্ছেন আতাপাত্তু? সরাসরি না বললেও তার ভেতরের কথা যেন ঠিক এমনটাই। ৪৮ বছর বয়সী আতাপাত্তুর ভাষ্যে, ‘আমি কোনো আলো দেখতে পাচ্ছি না। আমি একটা সুড়ঙ্গের মধ্যে দাঁড়িয়ে কিন্তু বাইরে কোনো আলো দেখছি না। আমি এতে অবাক হইনি। তবে আশা করছি আমার ধারণা ভুল। তবে আমি জানি ক্রিকেট বোর্ড এবং ক্রিকেট দলের মধ্যে থাকা কতিপয় ক্রিকেটার-ব্যক্তির জন্যই আজকের এই অবস্থা। এটা খুবই ভয়ানক ব্যাপার। সিস্টেমের মধ্যে থেকেই যে ক্ষতি করতে পারে তার থেকে সাবধান না হয়ে উপায় নেই।’
এসএএস/এমকেএইচ
Advertisement