বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির বিষয়ে নিউইয়র্কের আদালতে দায়ের করা মামলা টিকবে কিনা-সে বিষয়ে জাতীয় সংসদে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে। সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু এ সংশয় প্রকাশ করেন।
Advertisement
তিনি বলেন, যেখানে রিজার্ভ ব্যাংক বলেছে, এ মামলা একটি পলিটিক্যাল স্ট্যান্ড। মামলার আইনজীবী আজমল হক কিউসি বলেছেন, মামলাটি করা হবে কিনা তা নিয়ে দুই বছর চিন্তা করা হয়েছে। জানি না, এ মামলা টিকবে কিনা? সোমবার (৪ ফেব্রুয়অরি) সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ সংশয় প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে রিজার্ভের চুরি যাওয়া টাকা উদ্ধারের বিষয়ে সংসদে ৩০০ বিধিতে অর্থমন্ত্রীর বিবৃতিও দাবি করেন তিনি।
নিউইয়র্কের আদালতে রিজার্ভ চুরির মামলার বিষয়টি উল্লেখ করে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আমাদের চুরি হওয়া এই টাকা তিন বছরেও উদ্ধার হয়নি। তদন্ত কমিটিও হয়েছে। তারপর টাকা উদ্ধার হয়নি। আমরা জানতে পারিনি এই চুরির সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের কারা দায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংকের কারা এর সাথে জড়িত।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ১০ কোটি ডলার চুরি হয়ে যায়। আমরা তিন হাজার কোটি টাকার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে পারি না। চুরি যাওয়া ১০ কোটি ডলার উদ্ধার করতে পারি না। আমরা জানতে চাই, এর সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের কারা জড়িত অথবা কেউ জড়িত নেই।
Advertisement
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে চুরি হওয়া রিজার্ভের অর্থ ফেরত পেতে গত শুক্রবার (বাংলাদেশ সময় ১ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশনের (আরসিবিসি) বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়।
এদিকে চুরি যাওয়া রিজার্ভের অর্থ ফিরিয়ে আনার এ মামলা নিষ্পত্তিতে তিন বছর সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি।
রোববার (৩ ফেব্রুয়ারি) তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কের (ফেড) সঙ্গে মামলার বিষয়ে চুক্তি হয়েছে। তারা মামলার জন্য বিভিন্ন নথি, তথ্য সরবারহসহ সাক্ষী দেবে। ১০৩ পৃষ্ঠার মামলায় ১৫ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি, ৭টি প্রতিষ্ঠান ও ২৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে বিবাদী করা হয়েছে।
২০১৬ সালের ৪ ফেবরুয়ারি হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সুইফট সিস্টেমে ৭০টি ভুয়া পরিশোধ অর্ডার পাঠিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ হতে মোট ১৯২ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার অবৈধভাবে নেয়ায় চেষ্টা করা হয়। এর মধ্যে একটি পরিশোধ অর্ডারে শ্রীলঙ্কায় দুই কোটি ডলার ও চারটি অর্ডারে আট কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকের একটি শাখার ভুয়া গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট হয়ে জুয়ার বাজারে চলে যায়।
Advertisement
শ্রীলঙ্কা থেকে ইতোমধ্যে চুরি হওয়া সব অর্থ ফেরত আনা হয়েছে। আর ফিলিপাইনে যাওয়া অর্থের মধ্যে এক কোটি ৫০ ডলার দেশটির কোর্টের আদেশে ফেরত আনা হয়েছে। বাকি ছয় কোটি ৬৪ লাখ ডলার অনাদায়ী রয়েছে।
এইচএস/আরএস/জেআইএম