খেলাধুলা

মুশফিক-ফ্রাইলিংক নাকি সাকিব-রাসেল- টিকে থাকবেন কারা?

দলীয় খেলা ক্রিকেট। ব্যাট-বলের লড়াইয়ে দলগতভাবে ভালো না খেললে জয়ের স্বাদ পাওয়া যায় না- এটি না মানার কোনো সুযোগ নেই। তবে দলগত সাফল্য পাওয়ার প্রাথমিক শর্তই হলো ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স। দলের খেলোয়াড়রা ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে জ্বলে না উঠলে, সমষ্টিগতাবেও সম্ভব নয় ম্যাচ জিতে নেয়া।

Advertisement

যার প্রমাণ মিলেছে এবারের বিপিএলেও। ব্যক্তিগত সাফল্যে ভাস্বর হয়েছেন যারা দিনশেষে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জয় পেয়েছে তাদের দলও। ঠিক যেমনটা প্রথম পর্বে চিটাগং ভাইকিংসকে টেনেছেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম ও পেস বোলিং অলরাউন্ডার রবি ফ্রাইলিংক এবং ঢাকা ডায়নামাইটসের নির্ধারক হয়েছেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল।

প্রথম পর্ব শেষে এবার প্লে-অফের প্রথম ম্যাচে বাঁচা মরার লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে ঢাকা এবং চিটাগং। রাউন্ড রবিন লিগের প্রথম পর্বের দুই ম্যাচেই ঢাকার বিপক্ষে জয় পেয়েছিল চিটাগং। তবে নতুন দিন মানেই নতুন সব কিছু। তাই আজ (সোমবার) দুই দলের লড়াইটি ছড়াবে বাড়তি উত্তেজনা, দেখা মিলবে অসাধারণ ক্রিকেটের- এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।

এর আগে চলুন দেখে নেয়া যাক এলিমিনেটর-১'র এর ম্যাচটিতে আলো থাকবে যাদের ওপর:

Advertisement

চিটাগংয়ের ভরসা ফ্রাইলিংক-মুশফিক

এবারের বিপিএলে সারপ্রাইজ প্যাকেজ হিসেবেই আবির্ভূত হয়েছে মুশফিকুর রহীমের চিটাগং ভাইকিংস। আসরের শুরুর আগে যাদের কি-না অংশ নেয়া নিয়েই ছিলো অনিশ্চয়তা, সেই চিটাগংই মাঠের লড়াই শুরুর পর উপহার দিয়েছে একের পর এক বিস্ময়ের। যেসবের মূল কারিগর ছিলেন অধিনায়ক মুশফিক এবং অলরাউন্ডার ফ্রাইলিংক।

টুর্নামেন্টের প্রথম দুই ম্যাচে রানের দেখা পাননি মুশফিকুর রহীম। তবে ঘুরে দাঁড়াতে খুব একটা সময়ও নেননি তিনি। এখনো পর্যন্ত তার ব্যাট থেকে সেঞ্চুরি বা ৮০-৯০ রানের ইনিংস দেখা না গেলেও, প্রতি ম্যাচেই ধারাবাহিক ব্যাটিং করে দলকে দিয়েছেন নির্ভরতা।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের বিপক্ষে তার ৭৫ রানের অসাধারণ ইনিংসে ভর করেই ১৮৪ রান তাড়া করে জিতেছিল চিটাগং। সবমিলিয়ে এখনো পর্যন্ত ১২ ম্যাচ খেলে ৩৮ গড়ে ৩ ফিফটিতে আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪১৮ রান করেছেন মুশফিক। স্ট্রাইকরেটটাও স্বাস্থ্যবান, প্রায় ১৪০!

Advertisement

অন্যদিকে এবারের বিপিএলে যেনো নিজেকে নতুন করে চেনালেন দক্ষিণ আফ্রিকার দীর্ঘদেহী অলরাউন্ডার রবি ফ্রাইলিংক। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে বল হাতে ৪ উইকেট নেয়ার পর ব্যাট হাতে ম্যাচ ফিনিশ করে জিতেছিলেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। প্রথম পর্বের প্রায় পুরোটা সময়েই ইনজুরির সঙ্গে লড়াই করলেও, যখনই সুযোগ পেয়েছেন দেখিয়েছেন নিজের সামর্থ্য।

যে কারণে ১২ ম্যাচের মধ্যে মাত্র ৭টিতে খেলেও উইকেটশিকারের সংখ্যায় সেরা দশের মধ্যেই রয়েছেন ফ্রাইলিংক। এ ৭ ম্যাচের তার ঝুলিতে জমা পড়েছে ১২টি উইকেট, ব্যাট হাতে ১১৩ গড় ও ১৮২ স্ট্রাইকরেটে করেছেন ১১৩ রান। ঢাকার বিপক্ষে বাঁচা মরার লড়াইটি জিততে মুশফিকের দায়িত্ববোধ এবং ফ্রাইলিংকের অলরাউন্ড নৈপূণ্যের দিকেই তাকিয়ে থাকবে চিটাগং।

ঢাকার শক্তি দুই অলরাউন্ডার

সুনিল নারিন, হযরতউল্লাহ জাজাই, কাইরন পোলার্ড, আন্দ্রে রাসেল কিংবা নতুন যোগ হওয়া উপুল থারাঙ্গার মতো বিদেশী তারকারা থাকলেও এবারের আসরে ব্যাটে-বলে ঢাকা ডায়নামাইটসের সেরা পারফরমারের নামটি দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

ব্যাট হাতে নামের তুলনায় তেমন ‘ইমপ্যাক্ট’ পারফরম্যান্স না করলেও বল হাতে পুরো টুর্নামেন্টজুড়েই জাদু দেখিয়ে চলেছেন সাকিব আল হাসান। এখনো পর্যন্ত ১২ ম্যাচে শিকার করেছেন আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১টি উইকেট। ব্যাট হাতেও টুর্নামেন্টের দশম সর্বোচ্চ ২৭৫ রান করেছেন তিনি।

দলগঠনের সময় নামীদামী সব বিদেশী ব্যাটসম্যান-অলরাউন্ডারদের দলে ভেড়ালেও মাঠের খেলায় ঢাকার কেউই তেমন ছাপ রাখতে পারেননি। সে তুলনায় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সময়ের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল খানিক সুবিচার করতে পেরেছেন নিজের নামের প্রতি।

প্রথম পর্বের ১২ ম্যাচে বল হাতে শিকার করেছেন ১২টি উইকেট, নিয়মিত ডেথ ওভারে বোলিং করেও ওভারপ্রতি রান খরচ করেছেন মাত্র ৭ গড়ে। ব্যাট হাতে অধিনায়ক সাকিবের পরই দলের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৫৫ রান করেছেন তিনি, স্ট্রাইকরেটটা ১৫০! এলিমিনেটর ম্যাচ জিতে কোয়ালিফায়ারের নিশ্চয়তা পেতে ঢাকার সবাই অপেক্ষা করবে সাকিব-রাসেল ম্যাজিকের জন্য।

এসএএস/এমকেএইচ