জাতীয়

কর্ণফুলীতে উচ্ছেদ অভিযান শুরু

হাইকোর্টের নির্দেশনার পরেও কর্ণফুলী নদীতে অনেক জল গড়িয়েছে, কিন্তু কোনোভাবেই দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা যাচ্ছিল না। তবে এবার কিছু একটা হচ্ছে এমনটাই মনে করছে চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষ।

Advertisement

সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল সোয়া ১০টা থেকে শুরু হয়েছে কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পতেঙ্গা ভূমি সহকারী কমিশনার তাহমিলুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘কর্ণফুলীর অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযান ফলপ্রসূ করতে আমরা কিছু সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করেছি। চাক্তাই থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত কর্ণফুলীর অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযানকে তিন জোনে ভাগ করা হয়েছে। মোট ২১৮৭টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। প্রথম ধাপে আজ থেকে সদরঘাট থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত দুইশ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে অপর দু’টি জোনে উচ্ছেদ অভিযান চলবে।’

Advertisement

২০১০ সালে কর্ণফুলী নদীর গতিপথ স্বাভাবিক রাখতে নদীর সীমানা নির্ধারণ, দখল, ভরাট ও নদীতে যেকোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ রাখতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ নামের একটি সংগঠন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ১৮ জুলাই কর্ণফুলী নদীর প্রকৃত সীমানা নির্ধারণ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও ভূমি জরিপ অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

এ লক্ষ্যে গঠিত ১৬ সদস্যের কমিটি ২০১৬ সালের ১৮ জুন আরএস ও বিএস রেকর্ড অনুযায়ী কর্ণফুলী নদীর বর্তমান অবস্থান ও দখলদারদের চিহ্নিত করে একটি তালিকা তৈরি করে। এরপর ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট কর্ণফুলী নদীর দুই তীর দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা সরাতে ৯০ দিন সময় বেঁধে দিয়ে আদেশ প্রদান করেন।

Advertisement

জানা গেছে, অর্থ সঙ্কটসহ নানা জটিলতায় এতদিন উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। সম্পতি ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ বরাদ্দ প্রাপ্তির পর এ উচ্ছেদ অভিযানে নেমেছে জেলা প্রশাসন।

আশার দিক হলো, শুধু জেলা প্রশাসন নয়। অর্থ বরাদ্দ দেয়ার পাশাপাশি দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ।

হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘আমার কাছে অনেক কল এসেছে। রিকোয়েস্টও এসেছে। আমি মনে করি, এখানে রিকোয়েস্ট রাখার কোনো সুযোগ নেই। দীর্ঘসময় আমরা দিয়েছি। আর কিছু করার নেই। আমরা সবকিছু বিবেচনা করেই কাজ করছি।’

নদীপাড় দখল করে রাখা প্রভাবশালীদের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘কোনো প্রভাবশালী নাই। প্রভাবশালী বলতে আমি কিছু বুঝি না। সরকারের চেয়ে প্রভাবশালী কে? মহামান্য আদালতের রায় আমাদের আছে। কাজ দেখেন, কথা বেশি বলে লাভ নেই।’

এমবিআর/এমকেএইচ