আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে বাঁহাতি স্পিনারের খনি হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশে অফস্পিনারের সংখ্যাটাও নেহায়েত কম নয়। সে তুলনায় এখনো পর্যন্ত দেশের ক্রিকেটে কব্জির মোচড়ে ভেলকি দেখানো লেগস্পিনার চোখে পড়ে খুবই অল্প, হাতে গোনা কয়েকজন। এদের কেউই আবার সে অর্থে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেদের জাত চেনাতে পারেননি।
Advertisement
ফলে বিশ্ব ক্রিকেটে লেগস্পিনারের চলমান স্বর্ণযুগেও, বাংলাদেশ ক্রিকেটে কোনো লেগস্পিনার না থাকার হাহাকার নিত্যদিনের। যে কারণে কবজির মোচড়ে কাউকে বল ঘোরাতে দেখলেই মনে হয়, তিনি যেনো এসেছেন লেগস্পিনারের হাহাকার দূর করতে। কিন্তু প্রায়শই দেখা যায় যতোটা আগ্রহ এবং সম্ভাবনা নিয়ে শুরু করেন, ঠিক ততোটা মেলে ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আসতে পারেন না কেউই।
যে কারণে জুবায়ের হোসেন লিখনের পর এখনো পর্যন্ত কোনো লেগস্পিনারকে জাতীয় দলে নিতে পারেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। তবে সে তুলনায় ব্যতিক্রম মিনহাজুল আবেদিন আফ্রিদি। যিনি ছিলেন নিতান্তই নেট বোলার, যেখান থেকে কবজির ভেলকি দেখিয়ে সুযোগ পেয়ে যান বিসিবি একাদশেও।
মাঠে না নামলেও নেটে দারুণ বোলিং করে নজর কেড়েছেন রংপুর রাইডার্স ফ্র্যাঞ্চাইজির, সুযোগ পেয়ে যান চ্যাম্পিয়নদের স্কোয়াডে। প্রথম ১১ ম্যাচে তাকে মাঠে নামায়নি রংপুর। তবে রাউন্ড রবিন লিগের শেষ ম্যাচে সুযোগ পেয়ে নিজের জাত চেনাতে সক্ষম হয়েছেন বাংলাদেশি আফ্রিদি।
Advertisement
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের বিপক্ষে ২.৩ ওভার বল করে মাত্র ৮ রান খরচায় নিয়েছেন ১টি উইকেট। বয়স মাত্র ১৬ হলেও বিপিএলের মতো মঞ্চের চাপটা দারুণ সামলেছেন আফ্রিদি। যে কারণে ম্যাচ শেষে রংপুর অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার কণ্ঠে ঝড়েছে আফ্রিদির প্রশংসা। জাতীয় দলের এ অধিনায়ক মনে করেন বাংলাদেশ দলে যে লেগস্পিনের হাহাকার সেটি মিটতে আফ্রিদিদের মতো ছেলেদেরই প্রয়োজন।
ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি বলেন, ‘দেখুন, মনে মনে কিন্তু আমরা সবাই লেগ স্পিনার খুঁজছিলাম। আমি নিজেও খুঁজছি। ওকে (মিনহাজুল আফ্রিদি) পাওয়ার পর অনুশীলনে দেখেছিলাম। আমাদের দলে একটা জায়গা ফাঁকা ছিল, তখন আমি রেখে দিয়েছি। খেলানোর সুযোগ পাচ্ছিলাম না, আজ খেলিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম ম্যাচ তো, একেবারে বাচ্চা ছেলে, ১৭-১৮ বছর বয়স। আমার কাছে মনে হয় যেভাবে ও বোলিং করেছে, বিশেষ করে সেকেন্ড স্পেলে এসে দুইটা বল করেছে সে, দেখে মনে হয়ে বেশ কনফিডেন্ট। প্রথম দিকে কিছু হাফ ভলি, ফুল টস দিয়েছে। পরে যেই দুইটা বল করে সেটা জায়গা মত ছিল। এদেরকে আসলে একটু সাহস বা গাইডেন্স দিলে, আমাদের যেই দুর্বল জায়গাটা আছে, স্পেশালি বাংলাদেশ ক্রিকেটে লেগ স্পিনারের ক্ষেত্রে- এদের যদি ব্যাক আপ করা যায়, তাহলে হয়তো আমাদের জন্য ভালো হবে।’
এসএএস/জেআইএম
Advertisement