ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের দক্ষিণ বারতোপা গ্রামে ছয়টি কুকুরকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুই প্রতিবেশী। এরমধ্যে একটি মা কুকুর ও ৫টি ছানা। এমনকি এভাবেই আলেয়া বেগম ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয়া হয়েছে।
Advertisement
শনিবার ওই গ্রামের মৃত বাহাদুর খাদেমের স্ত্রী আলেয়া বেগমের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যায় প্রতিবেশী হাতেম আলীর ছেলে হাশেম (৫০) ও আরিফের (২৮) নামে শ্রীপুর থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
আলেয়া বেগম জানান, তিনি নোয়াখালী থেকে সপরিবারে ২০০৬ সালে গাজীপুরের ওই এলাকায় জমি কিনে বসবাস শুরু করেন। তখন থেকে অভিযুক্তরা তাদের উচ্ছেদ করে জমি দখলের জন্য বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়ে আসছে। বছর খানেক আগে তাদের বাড়িতে একটি কুকুর আসে। তখন থেকেই কুকুরটি তারা পুষতে শুরু করেন। আনুমানিক তিন মাস আগে কুকুরটি পাঁচটি ছানা প্রসব করে।
তিনি বলেন, বিরোধের জেরে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে অভিযুক্তরা তার বাড়িতে এসে তাকে ও তার মেয়ে খাদিজা আক্তারকে মারধর করে চলে যায়। পরে শনিবার সকাল ৯টার দিকে তার বাড়ির উঠানে এসে প্রথমে মা কুকুর ও একে একে পাঁচটি ছানার গলা কেটে হত্যা করে। এ সময় বাড়ির লোকজন কান্নাকাটি করলেও তাদের হিংস্রতা থামাতে পারেনি। কুকুরের মতো তাদেরকেও হত্যা করা হবে বলে অভিযুক্তরা হুমকি দিয়ে চলে যায়। পোষা কুকুর ও ছানা হারানোর শোকে পরিবারের সবাই ভেঙে পড়েছেন।
Advertisement
স্থানীয় মাওনা ইউপি সদস্য সুরুজ্জামান জানান, কিছু দুষ্কৃতকারী লোক ওই বিধবা নারীর জমি দখলের চেষ্টা করছে বলে আমাকে জানিয়েছে। আমি তাকে প্রশাসনের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দিয়েছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুল জলিল জানান, কোনো পশুর সঙ্গে নির্দয় ও নিষ্ঠুর আচরণ করলে তার বিরুদ্ধে ১৯৮২ সালের অ্যানিমেল ক্রোয়ালিটি আইনে শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে।
এদিকে অভিযুক্ত হাশেম জানান, তারা নিজেরাই কুকুর ছানা হত্যা করে আমাদের ওপর দোষ চাপিয়ে দিচ্ছে। আলেয়া বেগম ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করার অভিযোগ সঠিক না। আমরাও আলেয়ার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিব। আলেয়া আমাদেরকে একাধিকবার মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার হুমকি দিয়ে আসছে।
শ্রীপুর থানার কর্তব্যরত সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মোবারক হোসেন জানান, এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনা তদন্তের জন্য একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হবে।
Advertisement
আমিনুল ইসলাম/এফএ/পিআর