দেশজুড়ে

নতুন ভবনে যাচ্ছে আরএমপির সদর দফতর

ভাড়া ভবনে প্রায় দুই যুগ কেটেছে রাজশাহী নগর পুলিশ (আরএমপি) সদর দফতরের। কিন্তু এবার পাচ্ছে নিজস্ব ভবন। নগরীর সিঅ্যান্ডবি মোড়ে এখনকার সদর দফতরের জায়গায় গড়ে উঠছে বহুতল ভবন। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে ভবনের ভীত নির্মাণের কাজ।

Advertisement

আরএমপির স্টেট শাখা জানিয়েছে, দশ তলা ভীতে ভবন নির্মাণ হবে ছয়তলা। নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৭ কোটি ৮২ লাখ ৪৮ হাজার ৬৮১ টাকা। এছাড়া ৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ব্যয়ে রাস্তাসহ অন্যান্য নির্মাণকাজও থাকছে। এরই মধ্যে রাস্তা নির্মাণের পুরো অর্থ বরাদ্দ মিলেছে। আর ভবন নির্মাণে বরাদ্দ মিলেছে আরও আড়াই কোটি টাকা।

গণপূর্ত অধিদফতরের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে রাজশাহীর যৌথ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স কবির হোসেন ও সারা ইন্টারন্যাশনাল জেভি। ২০১৭ সালের ২৯ নভেম্বর কার্যাদেশ পায় প্রতিষ্ঠানটি। নয় মাস মেয়াদে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল গত বছরের ২৯ আগস্ট। কিন্তু এখন পর্যন্ত সম্পন্ন হয়েছে প্রায় ১০ শতাংশের মতো।

সরেজমিনে প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মূল ভবনের পাইলিং কাজ চলছে। গত কয়েকমাস ধরে পাইলিংয়ের জন্য কনক্রিটের কলাম তৈরির কাজ করছেন শ্রমিকরা। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন ঠিকাদারের প্রতিনিধি।

Advertisement

জানা যায়, এক দশমিক ৩৯৫ একরের এই এলাকটি একসময় রাজশাহী জেলা পরিষদের মালিকানায় ছিল। সেখানে ছিল পাকিস্তান আমলে নির্মিত দোতলা ভবন। ১৯৯২ সালের ১ জুলাই আরএমপি প্রতিষ্ঠার পর এই ভবনে শুরু হয় সদর দফতরের কার্যালয়।

ভাড়া হিসেবে নেয়া এই ভবন বাইরে থেকে ছিমছাম মনে হলেও ভেতরে জরাজীর্ণ। দফায় দফায় সংস্কার করে এতদিন কোনোরকমে কাজ চালিয়ে আসছিল আরএমপি। কিন্তু পুরনো হওয়ায় টেকসই হচ্ছিল না সংস্কার।

তবে শেষ পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের মধ্যস্থতায় ভবনসহ পুরো জায়গা কিনে নেয় নগর পুলিশ। আর এতে গুনতে হয় এক কোটি ৭৩ লাখ ৮০ হাজার ৩০৪ টাকা। এরপর থেকেই শুরু হয় নিজস্ব ভবন নির্মাণ প্রক্রিয়া।

দীর্ঘদিন ধরে নগর পুলিশের বোয়ালিয়া, মতিহার, শাহমখদুম ও কাশিয়াডাঙ্গা জোন দফতরও চলছে ভাড়া ভবনে। নগরীর ১২ থানার মধ্যে বোয়ালিয়া মডেল থানা, শাহমখদুম থানা এবং পবা থানার নিজস্ব ভবন রয়েছে। বাকি নয় থানার কার্যক্রম চলছে ভাড়া বাড়িতে। নির্মাণকাজের জন্য আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শাহমখদুম থানা ভবনে যাচ্ছে আরএমপি সদর কার্যালয়।

Advertisement

আরএমপির স্টেট শাখার দেয়া তথ্যে জানা যায়, ১২টি পুলিশ ফাঁড়ির মধ্যে মালোপাড়া, কাটাখালি, তালাইমারী, বোষপাড়া ও বায়া বাজার ফাঁড়ির নিজস্ব জমি আছে, কিন্তু ভবন নেই।

তবে ভবন নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে কেবল মালোপাড়া ফাঁড়ির। সেখানকার ট্রাফিক ব্যারাকে চলছে ফাঁড়ির কার্যক্রম। তাছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী কলেজ পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুটির ভবনে। এই তিন ফাঁড়ি বাদে নয় ফাঁড়ির কার্যক্রম চলছে ভাড়া বাড়িতে। প্রতি মাসে কেবল ভবন ভাড়ায় আরএমপিকে গুনতে হয় ৯ লাখ ২৩ হাজার টাকা। অর্থ বরাদ্দে বিলম্ব হলে মাঝে মাঝে পড়ে যায় বকেয়া।

নগর পুলিশের মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলম বলেন, দিনে দিনে নগরীর আয়তন ও জনসংখ্যা বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে অপরাধও। অপরাধের ধরন বদলে যাচ্ছে। নগরীর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নগর পুলিশের আধুনিকায়নে নেয়া হচ্ছে নানা পদক্ষেপ। এর সুফলও পাচ্ছে নগরবাসী। জনবান্ধব পুলিশ ব্যবস্থা বাস্তবায়নে আরএমপি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

এএম/জেআইএম