দেশজুড়ে

ফায়ার সার্ভিসের ভরসা ৪৫ ফুট মই!

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সিটি করপোরেশন রংপুর। বিভাগীয় এ নগরীতে একের পর এক গড়ে উঠছে বাণিজ্যিক ও আবাসিক বহুতল ভবন। গভীর পানিতে উদ্ধারকাজ, অধিক উচ্চতায় আগুন নেভানো এবং দুর্ঘটনার শিকার মানুষকে উদ্ধারে রংপুর বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সে আজও যুক্ত হয়নি আধুনিক সরঞ্জাম।

Advertisement

এদিকে গত ১৫ বছরে নগরীর জলাধারের সংখ্যা নেমে এসেছে অর্ধেকে। ফলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা মোকাবেলায় বাড়ছে ঝুঁকি।

রংপুর ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, অধিক উচ্চতায় অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকাজের জন্য স্নোরকেল ল্যাডার এবং হাই টার্ন্টেবল ল্যাডার (টিটিএল) বা বিশেষ মই নেই। নগরিতে প্রতি বছরই নতুন নতুন বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু এখনও ফায়ার সার্ভিসের ভরসা ৪৫ ফুটের মই।

সিটি করপোরেশনের নগর পরিকল্পনাবিদ নজরুল ইসলাম বলেন, বহুতল ভবন বলতে সাধারণত ৭তলা এবং এর ঊর্ধ্ব ভবনকে বোঝায়। গত সাত বছরে সিটি করপোরেশন থেকে দুই শতাধিক বাণিজ্যিক এবং আবাসিক বহুতল ভবনের নকশা পাস করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত নির্মিত হয়েছে ৪০টির মতো।

Advertisement

এ পরিস্থিতিতে অগ্নিনির্বাপণে ফায়ার সার্ভিসের প্রস্তুতি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে তাদের পানি, রাসায়নিক ও ফোম টেন্ডারবাহী তিনটি এবং বিশেষ পানি ও মিনি পানিবাহী দুটি গাড়ি রয়েছে। পানিবাহী গাড়িগুলোর ধারণক্ষমতা ৬ হাজার থেকে ৬৮ হাজার লিটার।

অন্য কোনো ফায়ার স্টেশনে কেমিকেল এবং ফোম টেন্ডার গাড়ি না থাকায় জেলার যেকোনো প্রান্তে পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থের অগ্নিকাণ্ডে ব্যবহার হয় বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি দুটি। এছাড়া দুটি পাম্প বহনকারী এবং উদ্ধার কাজে ব্যবহারের যন্ত্রপাতি ও ডুবুরির যন্ত্রপাতি বহনের গাড়ি রয়েছে দুটি। ১২টি ফায়ার বাইকও রয়েছে। তবে ৪৫ ফুটের বেশি উঁচু ভবনে আগুন নেভানোর সরঞ্জাম নেই।

এ ব্যাপারে রংপুর ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মো. ইউনুস আলী বলেন, কৌশলে বহুতল ভবনের আগুন নেভানোর সক্ষমতা ফায়ার সার্ভিসের আছে। তবে বহুতল ভবনের আগুন নেভাতে প্রয়োজনীয় স্নোরকেল এবং টিটিএল ল্যাডার নেই। ৪৫ ফুট ল্যাডারই একমাত্র ভরসা।

রংপুর বিভাগে বহুতল ভবনের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধির সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের আধুনিকায়ন সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় কিছুটা শঙ্কা প্রকাশ করে ইউনুস আলী আরও বলেন, রংপুরে বহুতল ভবন দ্রুত বাড়ছে। ফায়ার সার্ভিসের অনুমোদন নিয়ে ১৮ তলার বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। তবে অধিকাংশ বাণিজ্যিক ভবন মালিক ফায়ার সার্ভিসের অনাপত্তিপত্র নেয়ার প্রয়োজন মনে করছেন না।

Advertisement

অপরদিকে অধিক হারে ভবন নির্মাণের কারণে রংপুর সিটি করপোরেশনে উদ্বেগজনক হারে কমছে জলাধার।

সিটি করপোরেশনের বাজার শাখা সূত্র জানায়, রসিকের আওতায় এখন জলাধার রয়েছে মাত্র ১০টি। যেখানে ১৫ বছর আগেও এর পরিমাণ দ্বিগুণ ছিল।

এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক ইউনুস আলী ২০০৩ সালের অগ্নি প্রতিরোধ নির্বাপক আইনের ৭ ধারা মেনে ভবন নির্মাণের আহ্বান জানান।

জিতু কবীর/এফএ/এমএস