গণমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সত্যকে আড়াল করা যাবে না মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ বলেছেন, তথ্যমন্ত্রী যেন তথ্যযন্ত্রী। তিনি তার তথ্যযন্ত্রের মাধ্যমে তথ্য দেন। দেশে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে, মানুষ নিজের ছায়া দেখলেও চমকে ওঠে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘গতকাল (বুধবার) তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন- ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) রিপোর্ট বিএনপির আমলে সঠিক ছিল, এখন মনগড়া। আসলে তথ্যমন্ত্রী যেন তথ্যযন্ত্রী। তিনি তার তথ্যযন্ত্রের মাধ্যমে এমন তথ্য দেন, তাতে শুধু দেশবাসীই নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও সবিস্ময়ে হতবাক হয়ে পড়ে।’
তিনি বলেন, ‘টিআই-এর রিপোর্টে বাংলাদেশের দুর্নীতি বেড়েছে, এটি স্বীকার করে নিলে তো তথ্যমন্ত্রীর মন্ত্রীত্ব থাকে না। এ জন্য টিআই-এর রিপোর্টের বিরুদ্ধে তাকে অপ-তথ্য দিতে হচ্ছে।’
Advertisement
রিজভী বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে দুর্নীতির মাত্রা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রিত বলে সব তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে না। কেবল টিআই-ই নয়, ওয়াশিংটন ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘গ্লোবাল ফাইনান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি’ গত সোমবার বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার বিষয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা গেছে- শুধু ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আর গত দশ বছরে পাচার হয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। সুতরাং তথ্যমন্ত্রী গণমাধ্যমকে ডেকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সত্যকে আড়াল করতে পারবেন না।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘২৯ ডিসেম্বরের রাতের নির্বাচনে গঠিত ভুয়া ভোটের সরকার আরও জোরালোভাবে রাষ্ট্রের আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগকে একই কেন্দ্রের অধীন করেছে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভারসাম্য ক্ষয় হতে হতে এখন ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম। বিরোধী দল, মত ও বিশ্বাসের ওপর চলছে টার্গেটেড দমন-পীড়ন। ‘এক ব্যক্তি, এক দল’ নীতির বেপরোয়া আস্ফালন জনগণকে আতঙ্কিত করে রেখেছে।দেশে এখন এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যে, মানুষ নিজের ছায়া দেখলেই চমকে ওঠে।’
রিজভী আরও বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছিলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের মতোই আগামী উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোটারদের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে সাহায্য করে তিনি বড় ধরনের অপরাধ করার পরেও তার ঐ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ভোটারদের সঙ্গে সাম্প্রতিক কালের সেরা রসিকতা করলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনাররা নিজেদের জীবন কোনো মূল্যবোধের ওপর গড়ে তোলেননি। তারা নিজেদের জীবনে মনুষ্যধর্মকে বিসর্জন দিয়েছেন। এদের দ্বারা অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোর মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রকৃত জনরায়ের প্রতিফলন ঘটানোর দিন শেষ হয়ে গেল।’
তিনি বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যে এটি সুষ্পষ্ট হলো যে, এই কমিশনের তদারকিতে উপজেলা নির্বাচনগুলোও ভুয়া ভোটের নির্বাচনেরই মহৌৎসবে পরিণত হবে। অর্থাৎ নির্বাচনের আগের রাতেই একই কায়দায় সরকার মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে ব্যালট বাক্স পূর্ণ করা হবে।’
Advertisement
কেএইচ/আরএস/আরআইপি