আন্তর্জাতিক

অর্জিত ছুটি বাবদ ৩২ কোটি টাকা পেলেন এই ব্যক্তি

পেশায় তিনি একজন প্রকৌশলী। ভারতের অন্যতম বড় নির্মাণ সংস্থা লার্সেন অ্যান্ড টুবরোর সিংহভাগই তার হাতে গড়া। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে ৫৩টি বছর কাটিয়েছেন তিনি। কাজকে তিনি এতই ভালোবাসতেন যে, কখনও ছুটি নিতেন না। এভাবে তার ছুটি জমা পড়েছিল অনেক। এবার অবসরের পালা। তবে অবসরের সময় কাজ পাগল এই লোকটি কর্মজীবনের সঙ্গে শুধু অব্যবহৃত ছুটি থেকেই পেলেন প্রায় ৩২ কোটি টাকা।

Advertisement

ভারতীয় জনপ্রিয় বাংলা দৈনিক আনন্দবাজারে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনিল মানিভাই নায়েক নামের এই প্রকৌশলী অবসরকালে মোট ৩৮ কোটি টাকা পেয়েছেন। ২০১৭ সালের ৩১ মার্চের হিসেব অনুযায়ী, বাৎসরিক ৩.৩৬ কোটি টাকা বেতন পেতেন নায়েক। সঙ্গে কমিশন বাবদ ১৮.২৪ কোটি টাকা। এ ছাড়াও পারকুইসিটস অর্থাৎ উপরি লাভ ও কোম্পানির শেয়ারের লভ্যাংশ হিসেবেও পেতেন ১৯.২৭ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে অনিল ৭৯ কোটি টাকা মোট বেতন পেয়েছেন ২০১৬-২০১৭ আর্থিক বছরে।

২০০৩ সালে সংস্থার চেয়ারম্যান হন নায়েক। এরপর ২০০৭-২০০৮ সাল থেকে ২০১৬-২০১৭ পর্যন্ত দশ বছরে ২৯ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা মোট আয় থেকে সংস্থার আয় দাঁড়ায় ১ লাখ ১০ লাখ ১১ কোটি টাকায়।

শুধুমাত্র ইক্যুয়িটি ও স্টক অপশন মিলে মোট ৪০৩ কোটির সম্পত্তি রয়েছে তার। তবে এর মধ্যে তার প্রাপ্ত বেতন ধরা নেই। তবে নিজের ৭৫ শতাংশ সেভিংসই তিনি কয়েকটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানকে দান করে দিয়েছেন।

Advertisement

ক্যানসারে মারা যায় অনিলের দু’বছরের নাতনি নিরালি। তার নামেই সুরাতে রেডিয়েশন সেন্টার ও বেশ কয়েকটি হাসপাতালও খুলেছেন তিনি। পরিকল্পনা রয়েছে আরও হাসপাতাল ও সেবাকেন্দ্র তৈরির।

সাক্ষাৎকারে নায়েক জানান, তার বাবা মানিভাই নিছাভাই নায়েক একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন। মুম্বাইয়ের অভিজাত স্কুলে সুযোগ পেয়েও গ্রামের স্কুলেই পড়াতেন তিনি। সেই আদর্শকে মাথায় রেখে কাজকেই ধর্ম বলে মনে করতেন অনিল। তাই ছুটির দিন বলে তার কিছু ছিল না।

তবে ছুটি না নেয়ায় পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকেও কম কথা শুনতে হয়নি তাকে। তিনি বলেন, ‘তার পরিবার, ছেলে, পুত্রবধূ, মেয়ে, জামাই বারবার তার কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। তারা চাইতেন যেন ছুটির দিন তাদের সঙ্গে সময় দেয়া হয়।’ তবে তাদের এ আবদারকে কখনওই প্রাধান্য দেননি তিনি। কাজের জন্য ছুটে গেছেন অফিসে।

২৬ জানুয়ারি পদ্মবিভূষণ পেয়েছেন সত্তরোর্ধ্ব এই প্রকৌশলী। লার্সেন অ্যান্ড টুবরোর অবসরপ্রাপ্ত নন-এগজিকিউটিভ চেয়ারম্যান দেশের কর্পোরেট সেক্টরে অবদানের জন্য তাকে এ পুরস্কার দেয়া হয়েছে।

Advertisement

মিনহাজ মার্চেন্ট তাকে নিয়ে একটি বইও লিখেছেন। এতে তার সাদামাটা জীবন সম্পর্কে জানা যায়। বইয়ে তিনি লিখেছেন, ‘ধনাঢ্য এই ব্যক্তির মাত্র ৬টা শার্ট আর তিনটে স্যুট রয়েছে তার পরার জন্য।’

এসআর/জেআইএম