প্রবাস

এই জীবন রেখে লাভ কী : প্রবাসী মুক্তারের আক্ষেপ

‘আমি প্রতিদিনের মতো রাস্তায় গাছ লাগাচ্ছিলাম। হঠাৎ প্রচণ্ড বেগে একটি কালো রংয়ের গাড়ি আমার ওপরে উঠাইয়া দেয়। এরপরে আমি আর কিছু কইতে পারি না। পরে যখন আমার হুঁশ আসে, তখন হাসপাতালের বিছানায়। ডাক্তার আমার একটা পাও কাইট্যা ফালাইয়া দিছে। এখন আমি কি করুম। আমার এই জীবন রেখে লাভ কী? জীবনটা যে ধ্বংস করছে, তার আমি বিচার চাই।’

Advertisement

এভাবেই কান্নাজড়িত কণ্ঠে বৈরুতের আমেরিকান হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের বিছানায় পাগলের মতো প্রলাপ করছিলেন প্রবাসী মুক্তার মিয়া। ২৫ জানুয়ারি শুক্রবার লেবাননের রাজধানী বৈরুতের আল রৌশা এলাকায় মুক্তার মিয়া (২৫) নামে এক প্রবাসী বাংলাদেশি সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন। বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থানায়। বাবার নাম কালা মিয়া।

লেবাননে অবস্থানরত মুক্তারের বড় ভাই খোরশেদ জানায়, ২০১৩ সালে আমি আমার ছোট ভাইকে একটি কোম্পানির ভিসায় লেবাননে নিয়ে আসি। প্রতিদিনের মতো সে বৈরুতের আল রৌশা এলাকায় সড়কের আইল্যান্ডে গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত ছিল। হঠাৎ সকাল ৮টার দিকে দ্রুতগতির একটি কালো রংয়ের ল্যান্ড রোভার গাড়ি ব্রেকফেল করে রাস্তার আইল্যান্ডে উঠে পড়ে মুক্তার আলীকে প্রচণ্ড বেগে ধাক্কা দেয়।

পরে রেডক্রসের কর্মীরা মুক্তার আলীকে আমেরিকান হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তার শরীরে দুই বার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দুর্ঘটনায় থেতলে যাওয়া ডান পা-টি কেটে ফেলে দেয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মুক্তারকে আমেরিকান হাসপাতাল থেকে ডামুরের একটি স্থানীয় হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

Advertisement

বর্তমানে তার অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে। এদিকে লেবাননের পুলিশ গাড়িটিকে আটক করেছে এবং গাড়ির চালক বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।

অন্যদিকে মুক্তার আলীর দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বৈরুত দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হাসপাতালে ছুটে যায় এবং তার চিকিৎসার ব্যাপারে সার্বক্ষণিক তদারকি করছে বলে মুক্তারের বড় ভাই খোরশেদ জানায়।

বাবু সাহা, লেবানন থেকেএমআরএম/জেআইএম

Advertisement