অনিয়ম-দুর্নীতি আর ঋণ কেলেঙ্কারির কালিমা মুছতে নাম পরিবর্তন করেছে ফারমার্স ব্যাংক। এখন থেকে পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড নামে পরিচালিত হবে চতুর্থ প্রজন্মের এ বেসরকারি ব্যাংকটি।
Advertisement
বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতিবিভাগ গত ২৯ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) এ-সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপন জারি করে দেশের কার্যরত সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠানো হয়েছে। ফলে এখন থেকে ব্যাংকটি আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড নামে কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারি মঙ্গলবার থেকে তফসিলি ব্যাংকগুলোর তালিকায় দি ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের নাম পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড হিসেবে পরিবর্তন করা হয়েছে।
যাত্রা শুরুর পর থেকেই অনিয়ম-দুর্নীতিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে ফারমার্স ব্যাংক। ব্যাংকটিকে টেনে তুলতে ২০১৭ সালের শেষের দিকে সরাসরি হস্তক্ষেপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই বছরের ২৭ নভেম্বর ব্যাংকটির পর্ষদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য হন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর। তিনি ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ও নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন।
Advertisement
একই দিন ব্যাংকটির অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মাহাবুবুল হক চিশতীও পদচ্যুত হন। আরেক পরিচালক ড. মোহাম্মদ আতাহার উদ্দিন ভাইস চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে দাঁড়ান। এরপর বৈঠকে ব্যাংকের পরিচালক মোহাম্মদ মাসুদকে চেয়ারম্যান ও মারুফ আলমকে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়। নতুন করে ব্যাংকটির সবকটি কমিটি পুনর্গঠন করে ঢেলে সাজানো হয়।
ব্যাংকটির পুনর্গঠিত পর্ষদের সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই বৈঠক থেকে সাত দিনের মধ্যে পরিচালকদের অন্তত ২০০ কোটি টাকার জোগান দিতে গভর্নর ফজলে কবির নির্দেশ দেন। একই দিন ব্যাংকটিকে টেনে তুলতে নতুন পর্ষদকে তিন মাস সময় বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু পরিচালকরা টাকা না দেয়ায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি ব্যাংকটির।
এরপর মোহাম্মদ মাসুদকে সরিয়ে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান হিসেবে চৌধুরী নাফিজ সারাফাত দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দায়িত্বে অবহেলা ও ব্যাংক পরিচালনায় ব্যর্থতার দায়ে ২০১৭ সালের ১৯ ডিসেম্বর ব্যাংকের এমডি একেএম শামীমকে অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। বর্তমানে ব্যাংকটির এমডির দায়িত্ব পালন করছেন এহসান খসরু।
সরকারি সিদ্ধান্তে ফারমার্স ব্যাংককে উদ্ধারে ৭১৫ কোটি টাকা মূলধন জোগান দিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। এ অর্থের বড় অংশই খরচ হয়ে গেছে ভবনের ভাড়াসহ বিভিন্ন খাতে বকেয়া পরিশোধে।
Advertisement
এছাড়া আগে থেকেই মেয়াদি আমানত ও কলমানি হিসেবে ফারমার্সকে ধার দেয়া প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা আটকে আছে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের। পরে ফারমার্স ব্যাংকে ৫০০ কোটি টাকা ঢালার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংক ও আইসিবি। মূলধন সহায়তা দিয়ে এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ব্যাংকটির পর্ষদের পরিচালক হয়েছে।
এসআই/বিএ