উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে খুলনার দিঘলিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রস্তুতের নামে সিনিয়র নেতাদের নাম ভাঙিয়ে ব্যাপক অর্থ-বাণিজ্য হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
Advertisement
নেতাদের মনোনয়নে অর্থ-বাণিজ্যের একটি অডিও ফাঁস হয়েছে। অর্থ-বাণিজ্যের অডিও রেকর্ডটি দিঘলিয়া উপজেলার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। যা নিয়ে গোটা দিঘলিয়া উপজেলায় আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে প্রস্তুতকৃত এই তালিকা বাতিলের দাবি জানিয়েছে তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে তৃণমূলের মতামত নিয়ে দলীয় প্রার্থীদের তালিকা তৈরি করে কেন্দ্রে পাঠাতে বলা হয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের।
সে অনুযায়ী মঙ্গলবার দিঘলিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকদের ভোটের মাধ্যমে প্রতি পদে তিনজন করে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মনোনীত করেন।
Advertisement
উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা হঠাৎ করে তৃণমূলের নেতৃবৃন্দকে না জানিয়ে এ ভোটের আয়োজন করেন। এ সুযোগে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকরা একজোট হয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের কাছ থেকে সিনিয়র নেতাদের কথা বলে অর্ধকোটি টাকা বাণিজ্য করেছেন। পরে এর অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়ে যায়।
মনোনয়ন বাণিজ্যের অডিও রেকর্ডটি ফাঁস হয়ে গেলে সর্বত্র শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। মনোনয়ন নিয়ে অর্থ-বাণিজ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোল্লা আকরাম হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, অর্থ-বাণিজ্যের ব্যাপারে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগকে একাধিক লিখিত অভিযোগ দেয়া হলেও কোনো পদক্ষেপ নেননি নেতারা।
জানা যায়, উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আটজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১২ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক বরাবরে লিখিতভাবে আবেদন করেছেন।
Advertisement
সে অনুযায়ী সাতটি ইউনিয়ন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকদের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খান নজরুল ইসলাম ১৬ ভোটের মধ্যে ১২ ভোট, বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গাজী জাকির হোসেন সাত ভোট ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আমিনুর রহমান ছয় ভোট পেয়ে মনোনীত হন।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মো. মিজানুর রহমান ১২ ভোট, যুবলীগ নেতা মো. হেদায়েত হোসেন চৌধুরী ১০ ভোট, সেনহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম খান সাত ভোট পেয়ে মনোনীত হন।
পাশাপাশি মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সামসুন নাহার ১৫ ভোট, উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি মমতাজ শিরিন ময়না ১৪ ভোট ও উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নাজনিন আক্তার ছয় ভোট পেয়ে মনোনীত হন।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির মূল দায়িত্বে ছিলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী এমএম মুজিবুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারহানা নাজনিন, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এমএ রিয়াজ কচি, উপজেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক লোকমান হোসেন ও আনোয়ারা আন্না।
আলমগীর হান্নান/এএম/এমকেএইচ