উদ্ধার হবার প্রায় তিন মাস পর পঞ্চম দফায় দেশে ফিরলেন অভিবাসন প্রত্যাশী আরো ১২৫ বাংলাদেশি। মঙ্গলবার বেলা পৌনে দুটার দিকে কক্সবাজারের ঘুমধুম সীমান্ত হয়ে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। নির্ধারিত সময়ানুসারে তাদের ফিরিয়ে আনতে সকালে মংডুতে পতাকা বৈঠকে বসে বিজিবি ও মিয়ানমারের ইমিগ্রেশন বিভাগ।বৈঠক শেষে বিজিবির কাছে তাদের হস্তান্তর করা হয়। এসব অভিবাসীদের আগের মতো কক্সবাজার সংস্কৃতি কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অবৈধ পথে মালয়েশিয়া যাবার পথে মিয়ানমার উপকূলের জলসীমা থেকে সেদেশের নৌবাহিনীর হাতে অন্যদের সঙ্গে তারাও আটক হয়েছিলেন।বিজিবি-১৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে সকালে কক্সবাজারের ঘুমধুম সীমান্ত দিয়ে মংডুতে যান বিজিবির প্রতিনিধি দল। তাদের স্বাগত জানিয়ে পতাকা বৈঠকের আয়োজন করে মিয়ানমারের ইমিগ্রেশন পুলিশ। মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন ইমিগ্রেশন পুলিশের উপ-পরিচালক চ নাইং। বিজিবির পক্ষে কক্সবাজার সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল এম এম আনিসুর রহমান, সেক্টরের অতিরিক্ত পরিচালক মেজর আমিনুল ইসলাম, ১৭ ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর ইমরান উল্লাহ সরকারসহ কক্সবাজার জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ ও ইমিগ্রেশনের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।মিয়ানমারের পক্ষে মংডু ১ নম্বর বর্ডার গার্ড পুলিশের দ্বিতীয় কমান্ডিং কর্মকর্তা পুলিশ কর্নেল মাইও সুই, পুলিশ লে. কর্নেল কই তুই জ্যাসহ মিয়ানমার ইমিগ্রেশন, বিজিপি ও স্থানীয় জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিগণ পতাকা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।লে. কর্নেল রবিউল ইসলাম বলেন, কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে পৌঁছানোর পর এসব অভিবাসীর ব্যাপারে খোঁজ নেবে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা। এরপর তাদেরকে আইএমও এবং রেডক্রিসেন্টর কাছে হস্তান্তর করা হবে। পূর্বের নিয়মে বাড়ি ফিরবেন দেশে ফেরত আসা অভিবাসন প্রত্যাশীরা।আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এর ন্যাশনাল প্রোগাম অফিসার আসিফ মুনীর জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, দেশে ফেরত আসা বাংলাদেশি হিসেবে শনাক্ত আরো ১২৫ জন ১৪ জেলার বাসিন্দা। এর মধ্যে কক্সবাজারের ৮৫ জন, বান্দরবানের ৬, ফেনীর ৩, ভোলার ২, চাঁদপুরের ১, মাদারিপুরের ৭, গোপালগঞ্জের ১, রাজবাড়ির ২, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৫, গাজিপুরের ১, টাঙ্গাইলের ৪, ঢাকার ২, কিশোরগঞ্জের ২ ও মেহেরপুরের ৪ জন। তাদের মাঝেও কয়েকজন কিশোর রয়েছে। তাদের কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে ২৭ আগস্ট বিকেল নাগাদ এসব অভিবাসীকে বাড়ির উদ্দেশ্যে পাঠানো হতে পারে বলে জানান এ আইএমও কর্মকর্তা।প্রসঙ্গত, গত ২১ মে মিয়ানমারের জলসীমা থেকে সাগরে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার হওয়া ২০৮ জন এবং ২৯ মে আরও ৭২৭ জনকে উদ্ধার করে দেশটির নৌবাহিনী। যার মধ্যে ৮ ও ১৯ জুন, ২২ জুলাই এবং ১০ আগস্ট চার দফায় দেশে ফেরত আনা হয় ৫০৬ জনকে। ২৫ আগস্ট ১২৫ জনসহ এ পর্যন্ত ৬৩১ অভিবাসন প্রত্যাশীকে দেশে ফেরত আনা হলো।সায়ীদ আলমগীর/এমজেড/আরআইপি
Advertisement