জাতীয়

‘সুবিধাজনক সময়ে’ ইউএনএইচআরসি প্রতিনিধিদের সফর

>> মানবাধিকার ইস্যুতে ‘অনিষ্পন্ন’ রয়েছে সংস্থাটির প্রতিনিধিদের সফর

Advertisement

বাংলাদেশ আগামী তিন বছরের জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের (ইউএনএইচআরসি) সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে মানবিক ভূমিকার জন্য জাতিসংঘের বেশ প্রশংসা কুড়ালেও দেশের অভ্যন্তরীণ মানবাধিকার ইস্যুতে সংস্থাটির প্রতিনিধিদের বাংলাদেশ সফর ‘অনিষ্পন্ন’ রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন >> তৃতীয়বারের মতো ইউএনএইচআরসি’র সদস্যপদ জিতল বাংলাদেশ

তবে সফর অনুষ্ঠিত না হওয়ার বিষয়টি ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা বলছেন, ‘সুবিধাজনক সময়ে তাদের সফর নিষ্পন্ন করা হবে।’

Advertisement

সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ৩৮তম সেশনে জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার জায়েদ রাদ-আল হুসেইন বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিনিধিদের বাংলাদেশ প্রশংসনীয়ভাবে সবদিক থেকে সহযোগিতা করেছে। তবে রোহিঙ্গা ইস্যু বাদে বাংলাদেশের অন্যান্য মানবাধিকার ইস্যুতে সংশ্লিষ্ট জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ সফরের অনুমতি পাচ্ছেন না।’ জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিনিধিদের ১০টিরও বেশি সফরের অনুরোধ অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে আরও নিবিড় যোগাযোগ বাড়াতে আমি উৎসাহিত করি। বিশেষ করে সুশীল সমাজের মত প্রকাশের স্বাধীনতার স্থান সংকুচিত হয়ে যাওয়া এবং নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে বিচার বহির্ভূত হত্যার বিষয়ে উদ্বেগ জানাই।’

‘জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হওয়া’ বাংলাদেশের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিশ্বাস ও ভরসার প্রমাণ বলেও মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, ‘রোহিঙ্গাসহ মানবাধিকারের অন্যান্য ইস্যুতে বাংলাদেশ বেশ সুনাম অর্জন করেছে। এ কারণে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে আমাদের এত বড় জয়।’

Advertisement

সংস্থাটির সদস্যদের বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মানবাধিকার কাউন্সিল তাদের সফরের বিষয়ে আমাদের অবগত করলেও অনেক ক্ষেত্রে আমরা সময় বের করতে পারিনি। আবার আমরা আমাদের সুবিধা মতো সময়ে আমন্ত্রণ জানালেও তারা তখন সময় বের করতে পারেননি। এ রকম হতে পারে।’

‘হয়তো এমন কারণে বেশকিছু সফর অনিষ্পন্ন থেকে গেছে। এগুলোও সুবিধাজনক সময়ে নিষ্পন্ন করা হবে’- যোগ করেন তিনি।

আরও পড়ুন >> রোহিঙ্গা সংকটে ২০১৯ সালে প্রয়োজন ৯২ কোটি ডলার

মানবাধিকার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে প্রশংসা ও সুনাম কুড়ালেও অভ্যন্তরীণ মানবাধিকার ইস্যুতে খুব একটা সুবিধাজনক স্থানে নেই বাংলাদেশ। এ ধরনের সফরে বাধা দেয়া বা না হওয়ায় বাইরে ভুল বার্তা যেতে পারে।

উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভোটের মাধ্যমে ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হয় বাংলাদেশ।

জাতিসংঘের সদর দফতরে অনুষ্ঠিত সেই নির্বাচনে ১৮টি শূন্য পদে নির্বাচন করে বাংলাদেশ। এতে ৯৭টি ভোটের প্রয়োজন হলেও ১৮৮টি ভোটের মধ্যে ১৭৮টি ভোট পেয়ে জয়ী হয় বাংলাদেশ।

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে বাংলাদেশসহ পাঁচটি দেশ জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে আগামী তিন বছরের জন্য সদস্য নির্বাচিত হয়।

জেপি/এমএআর/আরআইপি