নিয়মিত মুনাফা করা এবং শেয়াহোল্ডারদের মোটা অংকের লভ্যাংশ দেয়া ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি এসিআই লিমিটেড এবার লোকসানের কবলে পড়েছে। সর্বশেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর’ ২০১৮) প্রতিষ্ঠানটি প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে ৭৮ পয়সা লোকসান করেছে।
Advertisement
এই তিন মাসের ব্যবসায় লোকসান করলেও অর্ধবার্ষিক (২০১৮ সালের জুলাই-ডিসেম্বর) হিসাবে কোম্পানিটি মুনাফায় রয়েছে। তবে এ মুনাফার পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় কমে সাড়ে ১৭ ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে।
কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) থেকে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি হিসাব বছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৭৮ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি মুনাফা হয়েছিল ৫ টাকা ৪৪ পয়সা।
Advertisement
আর চলতি হিসাব বছরের জুলাই-ডিসেম্বর এই ছয় মাসে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার প্রতি মুনাফা হয়েছে ৪৪ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে এই মুনাফার পরিমাণ ছিল ৭ টাকা ৭২ পয়সা।
লোকসানের পাশাপাশি এসিআইয়ের সম্পদ মূল্যেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে সম্পদ মূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ২১২ টাকা ৭৩ পয়সা, যা ২০১৮ সালের ৩০ জুন শেষে ছিল ২২২ টাকা ৯ পয়সা।
এদিকে কোম্পানিটির পরিচালন নগদ প্রবাহের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত শেয়ার প্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো বা পরিচালন নগদ প্রবাহ দাঁড়িয়েছে ঋণাত্মক ২৪ টাকা ৫৬ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ছিল ঋণাত্মক ৫০ টাকা ১৮ পয়সা।
লোকসান ও সম্পদ মূল্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় মঙ্গলবার এসিআইয়ের শেয়ারের দামে বড় ধরণের পতন হয়েছে। এদিন প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দাম আগের কার্যদিবসের তুলনায় ২৩ টাকা ৫০ পয়সা বা ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ কমে গেছে।
Advertisement
সর্বশেষ প্রান্তিকে লোকসান করলেও এসিআই লিমিটেড নিয়মিত ভালো মুনাফা করে আসছিল। ফলে প্রতিবছরই শেয়াহোল্ডারদের মোটা অংকের লভ্যাংশ দিয়েছে। ২০১৮ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ১১৫ শতাংশ নগদ এবং সাড়ে ৩ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দিয়েছে।
এর আগের বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে কোম্পানিটি থেকে শেয়ারহোল্ডাররা ১১৫ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে পেয়েছিলেন। তার আগের বছর ২০১৬ সালে তারা ১১৫ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ লভ্যাংশ হিসেবে পেয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত ৪৯ কোটি ৮৮ লাখ টাকার পরিশোধিত মূলধনের এ কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ১৯৭৬ সালে। প্রতিষ্ঠানটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৪ কোটি ৯৮ লাখ ৮৯ হাজার ৫২৭টি। এর মধ্যে ৪৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে ২৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ২৯ দশমিক ১৩ শতাংশ শেয়ার।
এমএএস/এমএমজেড/এমকেএইচ