দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশ্বের অনেক দেশের অভিবাসী বাস করেন। দেশটির সরকারি তথ্যমতে ২০১৬ সালেই অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ২০ লাখেও বেশি। যারা নানা সময়ে ভাগ্যের অন্বেষণে সেখানে গিয়েছেন। তাদের মধ্যে বাংলাদেশির সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। তবে সম্প্রতি বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন। যেখানে গত এক সপ্তাহেই তিন বাংলাদেশি খুনের শিকার হন।
Advertisement
গত ২৩ জানুয়ারি (বুধবার) রাতে দেশটির নর্থ-ওয়েস্ট প্রভিন্সের রাস্টেনবার্গে নিজ দোকানে সন্ত্রাসীদের গুলিতে মহিন উদ্দিন মহিন (৪০) নামে এক বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। নিহত মহিন উদ্দিনের দেশের বাড়ি ফেনী দাগনভূঞার চন্দ্রদ্বীপ গ্রামে। তিন বছর আগে জীবিকার তাগিদে দক্ষিণ আফ্রিকায় যান তিনি।
নিহতের ভাই হুমায়ুন কবির জানান, বেশ কিছুদিন ধরে কৃষ্ণাঙ্গ সন্ত্রাসীরা চাঁদার দাবিতে মহিনকে হুমকি দিয়ে আসছিল। বুধবার রাতে কয়েকজন সন্ত্রাসী দোকানে হামলা করে লুটপাট করে যাওয়ার সময় তাকে গুলি করে হত্যা করে। সকালে দোকান বন্ধ দেখে পার্শ্ববর্তী ব্যবসায়ী ও লোকজন খোঁজাখুজি করতে গিয়ে দোকানের ভেতরে ফ্রিজের মধ্যে মহিনের মরদেহ দেখতে পায়।
এছাড়া গত রোববার (২৭ জানুয়ারি) দক্ষিণ আফ্রিকায় আরও এক বাংলাদেশি সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন। দেশটির জোহানেসবার্গে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত বাংলাদেশির নাম সিরাজুল ইসলাম মোল্লা।
Advertisement
জোহানেসবার্গ শহরের স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। সিরাজুল ইসলাম মোল্লা মাদারীপুর জেলার সন্ন্যাসীর চর গ্রামের হাজী নুর উদ্দিনের ছেলে।
জানা গেছে, ওই এলাকায় সিরাজুল ইসলামের নিজের প্রতিষ্ঠানে ডাকাতরা চাঁদা চাইতে গেলে তিনি তা দিতে অস্বীকার করেন। এরপর ডাকাতরা তার প্রতিষ্ঠানে হামলা করে। তাকে গুলি করে ডাকাত সদস্যরা পালিয়ে যায়। পরে তার সহকর্মীরা দ্রুত উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
সর্বশেষ গত রোববার (২৭ জানুয়ারি) দক্ষিণ আফ্রিকার জুলু নাটাল প্রভিন্সের পিটা মেরিজবার্গ শহরে মোহাম্মদ শাহপরান নামে আরও এক বাংলাদেশি খুনের শিকার হন। দেশটির স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৩টা ও বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শাহপরান ফেনী শহরের মহিপাল মধ্যম চাডিপুর ভূঁইয়াবাড়ির পেয়ার আহাম্মদ ভূঁইয়ার ছেলে। নিহতের ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া জানান, প্রায় ১৩ বছর আগে তার ভাই আফ্রিকায় পাড়ি জমান।
Advertisement
রোরবার (২৭ জানুয়ারি) সুপার মার্কেটে দোকানের ক্যাশ কাউন্টারে স্থানীয় একজনের সঙ্গে পণ্যের দাম নিয়ে তার ভাইয়ের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হলে সন্ত্রাসীরা শাহপরানের বুকে ছুরিকাঘাত করে। পরে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আরএস/পিআর