খেলাধুলা

বিপিএলের চলতি আসর যেন রেকর্ড স্কোরের বছর!

এক ইনিংসে দুই সেঞ্চুরি, ওয়ানডে এবং টেস্ট ক্রিকেটে অহরহ হয়ে থাকে। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে? মাত্র ২০ ওভারের ইনিংস। তাতে আবার দু’জন সেঞ্চুরি করবে; অবিশ্বাস্য ব্যাপার, তাই না! কিন্তু এই অবিশ্বাস্য কাণ্ডটিই ঘটে গেছে টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে তিনবার। যার সর্বশেষ সংজোযনটা ঘটিয়েছে রংপুর রাইডার্স।

Advertisement

চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে গত সপ্তাহে এই এক ম্যাচেই কয়েকটি রেকর্ডের জন্ম দিয়েছে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল রংপুর রাইডার্স। বিপিএলের ইতিহাসে রেকর্ড স্কোর গড়ে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা। ৪ উইকেট হারিয়ে রংপুরের সংগ্রহ দাঁড়িয়েছিল ২৩৯ রানে।

রেকর্ড স্কোর গড়ার পথে জোড়া সেঞ্চুরি উঠে এসেছে রংপুরের দুই ব্যাটসম্যানের ব্যাটে। ইংলিশ তারকা অ্যালেক্স হেলস আর দক্ষিণ আফ্রিকান তারকা রিলে রুশো- দু’জনই করেন সেঞ্চুরি। এর আগে এক ইনিংসে ২০১১ সালে ইংল্যান্ডের ফ্রেন্ডস লাইফ টি-টোয়েন্টিতে গ্লস্টারশায়ারের হয়ে জোড়া সেঞ্চুরি করেন কেভিন ও’ব্রায়েন (৫২ বলে ১১৯) এবং হ্যামিশ মার্শাল (৫৪ বলে ১০২)। এবং ২০১৬ সালে আইপিএলে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে বিরাট কোহলি (৫৫ বলে ১০৯) এবং এবি ডি ভিলিয়ার্স (৫২ বলে ১২৯*) করেছিলেন।

ওই দুই ঘটনার পর এবার রংপুর রাইডার্সের অ্যালেক্স হেলস আর রিলে রুশো এক ইনিংসে জোড়া সেঞ্চুরি করে বসেন। টি-টোয়েন্টে ক্রিকেটের ইতিহাসে যা মাত্র তৃতীয় ঘটনা হয়ে থাকলো।

Advertisement

তবে ওই দুই সেঞ্চুরিতে রংপুরের স্কোরবোর্ডে যা উঠলো, তা হয়ে থাকলো বিপিএলের ইতিহাসে প্রথম। ৪ উইকেট হারিয়ে ২৩৯, অবিশ্বাস্য স্কোর গড়েছিল রংপুর রাইডার্স। তার আগে ২০১৩ সালে ৪ উইকেটে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে করেছিল ২১৭ রান। ২০১৯ সাল পর্যন্ত ওটাই ছিল বিপিএলে সর্বোচ্চ রানের স্কোর।

চলতি বিপিএলের শুরুটা ছিল ঢাকায় এবং শুরুতে যে পরিমান লো স্কোরের ম্যাচ হচ্ছিল, তাতে মনেই হচ্ছিল এবারের বিপিএল না পুরো পানসে হয়ে যায়! কিন্তু ঢাকায়ও শেষের দিকে, সিলেটে এবং চট্টগ্রামে ঠিকই রানের নহর বয়ে যাচ্ছে প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই। একটা-দুটা ম্যাচ ছিল কিছুটা ব্যতিক্রম।

এবার রংপুর রাইডার্সের গড়া সেই ২৩৯ রানের রেকর্ড তো প্রায় ভেঙেই দিতে যাচ্ছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামেই খুলনা টাইটান্সকে পেয়ে যা দেখালো কুমিল্লার ব্যাটসম্যানরা, সেটাও ছিল রীতিমত অবিশ্বাস্য। ৫ উইকেট হারিয়ে ২৩৭ রান সংগ্রহ করে কুমিল্লা।

মাত্র ২ রানের জন্য রংপুরের রেকর্ডকে স্পর্শ করতে পারেনি কুমিল্লা। তবে, এভিন লুইসের সেঞ্চুরিতে একেবারে ধারে কাছে পৌঁছে গিয়েছিল তারা। তবুও তো কুমিল্লার এই ইনিংসটা ঠাঁই পেলো বিপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ স্কোরগুলোর তালিকায় দ্বিতীয় নম্বরে। এ কারণে বলা যায়, বিপিএলে এবারের আসর যেন রান করার রেকর্ডের আসর।

Advertisement

যদিও এবারের আসরে ২০০ প্লাস স্কোর হয়েছে এখনও পর্যন্ত কেবল ৩টি। উপরোল্লিখিত দুটি ছাড়াও আরেকটি ম্যাচে ২০০ প্লাস রান করেছিল চিটাগং ভাইকিংস। খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে ৪ উইকেট হারিয়ে ২১৪ রান করেছিল মুশফিকুর রহীমের দল। যদিও বিপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পাঁচ সংগ্রহের তিনটাই এবারের আসরে! এছাড়া এবার ১৯৮ রান করেছিল মেহেদী হাসান মিরাজের রাজশাহী কিংস।

তবে ২০০ প্লাস স্কোর সবচেয়ে বেশি হয়েছিল ২০১৭ সালে, তথা আগের আসরে। সেবার মোট ৭টি ২০০ প্লাস স্কোর হয়েছিল। এছাড়া ২০১৩ সালে ২০০ প্লাস স্কোর হয়েছিল ৫টি। ২০১২ সালে হয়েছিল ২টি।

বিপিএল ইতিহাসের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ

১. রংপুর রাইডার্স : ২৩৯/৪ বনাম চিটাগং ভাইকিংস, ২০১৯২. কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস : ২৩৭/৫ বনাম খুলনা টাইটানস, ২০১৯৩. ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স : ২১৭/৪ বনাম রংপুর রাইডার্স, ২০১৩৪. চিটাগং ভাইকিংস : ২১৪/৪ বনাম খুলনা টাইটানস, ২০১৯৫. দুরন্ত রাজশাহী : ২১৩/৬ বনাম বরিশাল বার্নার্স, ২০১৩

আইএইচএস/পিআর