নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার বিষয়ে বাংলাদেশি তদন্তকারী ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন এম রহমতুল্লাহ বলছেন, ‘নেপালের তদন্তে বলা হচ্ছে পাইলট ককপিটে বসে ধূমপান করছিলেন। এ নিয়ে বিতর্কের কিছু নেই। কারণ, এয়ারক্রাফটে ধূমপান না করার আন্তর্জাতিকভাবে কোনো বিধিনিষেধ নেই। তবে টয়লেটে ধূমপান না করার জন্য নির্দেশনা থাকে। সুতরাং এটি দুর্ঘটনার কোনো কারণ নয়।’
Advertisement
সোমবার বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম নাইম হাসান।
আরও পড়ুন- পাইলটের অনুরোধ রাখেনি কন্ট্রোল রুম (পাইলটের শেষ অডিও রেকর্ড)
পাইলট আবিদ সুলতানকে মূলত দায়ী করে ভারত ও নেপালের তদন্ত প্রতিবেদনকে ‘ভিত্তিহীন’ আখ্যা দিয়েছেন তদন্ত দলের সঙ্গে যুক্ত বাংলাদেশি তদন্তকারী ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন এম রহমতুল্লাহ।
Advertisement
তিনি বলেন, ক্যাপ্টেনের ল্যান্ডিংয়ের প্রস্তুতিকালে কন্ট্রোল টাওয়ারের আরও সতর্ক থাকা দরকার ছিল।
আরও পড়ুন- আবারও ক্যাপ্টেন আবিদের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা
গত বছরের ১২ মার্চ ৭১ জন আরোহী নিয়ে ঢাকা থেকে কাঠমান্ডুগামী বাংলাদেশের বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলার ফ্লাইট বিএস২১১ ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয়। এতে নিহত ৫১ জনের মধ্যে ২২ জন নেপালি ও একজন চীনা নাগরিক, অন্যরা সবাই বাংলাদেশি।
আরও পড়ুন- কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে পাইলটের শেষ যা কথা হয় (৪ মিনিটের অডিও)
Advertisement
এদিকে ইউএস-বাংলার বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার দায় আবারও বাংলাদেশের পাইলট আবিদ সুলতানের ওপর চাপানোর চেষ্টা করা হয়েছে নেপালের তরফ থেকে।
আরও পড়ুন- পাইলটকে একটা ক্রেডিট দিতে হবে
সোমবার ভারতের নয়াদিল্লিভিত্তিক সংবাদ সংস্থা এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনালের (এএনআই) এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার তদন্তে একটি কমিশন গঠন করা হয়েছিল। সেই তদন্ত কমিশন গত রোববার চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করেছে।
আরও পড়ুন- প্রায়ই ভুল এবং বিভ্রান্তিকর বার্তা দেয় ত্রিভুবনের এটিসি টাওয়ার
প্রতিবেদনে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, চলন্ত বিমানের ককপিটে বসেই ধূমপান করছিলেন পাইলট। তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই গেল বছরের আগস্টের শেষ দিকে নেপালি গণমাধ্যম দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট এক প্রতিবেদনে একইভাবে দায় চাপানো হয়েছিল আবিদের ওপর। কাঠমান্ডু পোস্টের ওই প্রতিবেদনে তখন উদ্বেগও জানিয়েছিল তদন্ত কমিশন। অথচ পাঁচ মাসের মাথায়ই ভিত্তিহীন ওই প্রতিবেদনের সুরেই কথা বলছে তদন্ত কমিশন।
আরও পড়ুন- ত্রিভুবনের অব্যবস্থাপনাই ট্র্যাজেডির জন্য দায়ী : নেপালি টাইমস
তদন্ত কমিশন এক বিবৃতির মাধ্যমে জানিয়েছে, ‘দেশের অভ্যন্তরে ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে কোম্পানির ধূমপান নিষিদ্ধের নিয়ম আছে। কিন্তু কামিশনের হাতে আসা তথ্যমতে বিমানটির পাইলট ইন কমান্ড (পিআইসি) ছিলেন একজন ধূমপায়ী। ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (সিভিআর) থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিমান চলাকালীন ককপিটে বসে ধূমপান করছিলেন তিনি।’
তদন্ত কমিটির ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘তদন্ত কমিশন এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, বিমানটির নিয়ন্ত্রণকারীর অপারগতা ও ক্রু সদস্যদের পরিস্থিতিগত সচেতনতার অভাবেই এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।’
আরএম/জেডএ/পিআর