অর্থনীতি

শুরুর বড় উত্থান রূপ নিল বড় পতনে

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে (সোমবার) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান মূল্যসূচকের বড় উত্থানে লেনদেন শুরু হয়। তবে শেষ পর্যন্ত সূচকের সেই উত্থান টেকেনি। উল্টো লেনদেন শেষে বড় পতন হয়েছে।

Advertisement

এদিন মূল্যসূচকের পতনের ক্ষেত্রে সামনের দিক থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে ব্যাংক ও বীমা খাত। কয়েকদিন ধরে লেনদেন হওয়া সিংহভাগ বীমার দাম বাড়লেও সোমবার সেই দৃশ্যের অবতারণা হয়নি। বরং দরপতনের খাতায় নাম লিখিয়েছে প্রায় সবকটি বীমা কোম্পানি। একই অবস্থা ব্যাংক কোম্পানিগুলোরও।

ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া মাত্র ৬টি বীমা কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪১টির। অপরদিকে ৩০টি ব্যাংকের মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ২টির। বিপরীতে দাম কমেছে ২৬টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২টির দাম।

অবশ্য দিনের প্রথম ঘণ্টার চিত্র এমন ছিল না। প্রথম ঘণ্টায় ব্যাংক-বীমাসহ লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ে। এমনকি দাম বেড়ে তিনটি বীমা কোম্পানির বিক্রেতা শূন্যও হয়ে পড়ে। ব্যাংক-বীমাসহ বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার কারণে সকাল ১১টা ১১ মিনিটে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে যায়।

Advertisement

তবে বিপত্তি ঘটে এর পরই। একের পর এক দরপতন হতে থাকে ব্যাংক ও বীমা কোম্পানির শেয়ারের। ধীরে ধীরে সেই ছোঁয়া লাগে অন্য খাতের প্রতিষ্ঠানেও। ফলে টানা নিম্নমুখী হতে থাকে মূল্যসূচক। তবে বড় মূলধনের কোম্পানি এবং ইসলামী ধারনার প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারের দাম তুলনামূলক কমে। ফলে এ দু’টি মূল্যসূচক শেষ পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখীই থেকে গেছে।

কিন্তু ব্যাংক ও বীমা কোম্পানির শেয়ারের পতনের ধাক্কায় দিনের লেনদেন শেষে সব খাত মিলিয়ে ২১৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দরপতনের তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম বেড়েছে মাত্র ১০৫টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টির দাম।

বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩৫ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৯০৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইর অপর দুটি মূল্যসূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৪৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। তবে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩২৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

প্রধান মূল্যসূচকের পতনের পাশাপাশি ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। বাজারটিতে দিনভর লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকার শেয়ার। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ১৯৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। সে হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ১৮৯ কোটি ৩ লাখ টাকা।

Advertisement

টাকার অংকে এদিন ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির আজ মোট ৪৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা গ্রামীণফোনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকার। ৩৪ কোটি ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স।

লেনদেনে এরপর রয়েছে- স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ইষ্টার্ন হাউজিং, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, ইউনাইটেড ফইন্যান্স, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স এবং ইনটেক লিমিটেড।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএসসিএক্স ৪০ পয়েন্ট কমে ১০ হাজার ৯৬৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকার শেয়ার। লেনদেন হওয়া ২৭৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের মধ্যে ৮৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭০টির। আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ২২টির।

এমএএস/এমএমজেড/পিআর