একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার আব্দুল মিজতসহ সাত আসামির বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি-কেস অ্যায়োটিং ভারডিক্ট) রেখেছেন ট্রাইব্যুনাল। বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন।
Advertisement
বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন মামলার অন্যতম প্রসিকিউটর মো. মোখলেসুর রহমান বাদল। আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল ও সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি, জাহিদ ইমাম ও তাপস কান্তি বল। আসামিপক্ষে ছিলেন গাজী এম এইচ তামিম। মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার আসামিরা হলেন শেখ মো. আব্দুল মজিদ ওরফে মজিদ মওলানা (৬৬), মো. আব্দুল খালেক তালুকদার (৬৭), মো. কবির খান (৭০), আব্দুস সালাম বেগ (৬৮) ও নুরউদ্দিন ওরফে রদ্দিন (৭০)। মোট সাতজন আসামির মধ্যে আব্দুর রহমান (৭০), আহাম্মদ আলী (৭৮) গ্রেফতারের পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অবস্থায় মারা যান। বাকি পাঁচজন পলাতক রয়েছেন।
আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল অভিযোগ (চার্জ) গঠন করে বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আটজন নিরীহ মানুষকে অপহরণের পর হত্যা, তিনটি বাড়ির মালামাল লুট, আটটি ঘরে অগ্নিসংযোগ ও একজনকে ধর্ষণের অভিযোগ।
২০১৬ সালের ২২ মে তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী)।
Advertisement
তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের সময় তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ সমন্বয়ক সানাউল হক জানান, মজিদ মাওলানা মুক্তিযুদ্ধের সময় নেজামে ইসলামির নেতা হিসেবে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। খালেক তালুকদার একাত্তরে মুসলিম লীগের কর্মী হিসেবে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন।
পরবর্তীতে বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের সঙ্গে জড়িত থাকলেও বর্তমানে তিনি পূর্বধলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।
এ ছাড়া কবির খান মুসলিম লীগের কর্মী হিসেবে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন, বর্তমানে উপজেলা বিএনপির সদস্য। আব্দুর রহমান, আব্দুস সালাম বেগ ও নুর উদ্দিনও মুক্তিযুদ্ধের সময় মুসলিম লীগের কর্মী হিসেবে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন, বতর্মানে তারা বিএনপির সমর্থক।
আসামিদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের ২১ আগস্ট দুপুর একটায় রাজাকার বাহিনী নিয়ে বাড়হা গ্রামের আব্দুল খালেককে গুলি করে হত্যার পর কংস নদীর পানিতে মরদেহ ভাসিয়ে দেয়ার অভিযোগে মামলা হয় ২০১৩ সালে। শহীদ আব্দুল খালেকের ছোট ভাই মুক্তিযোদ্ধা আ. কাদির মামলাটি করেন।
Advertisement
এফএইচ/এসআর/এমএস