উন্নয়নমূলক কাজের কারণে ঢাকা মহানগরীতে ধুলাবলিতে বায়ুদূষণ প্রতিরোধে সকাল-বিকেল রাস্তায় পানি দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
Advertisement
একইসঙ্গে, ঢাকা শহরে যারা বায়ুদূষণের কারণ সৃষ্টি করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সপ্তাহে দুই বার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে পরিবেশ অধিদফতরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আদালত বলেছে, রাজধানীর যেসব জায়গায় উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ চলছে, সেসব জায়গা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এমনভাবে ঘিরে ফেলতে হবে, যাতে শুকনো মৌসুমে ধুলো ছড়িয়ে বায়ু দূষণ বাড়তে না পারে। পাশাপাশি ‘ধুলোবালি প্রবণ’ এলাকাগুলোতে দিনে দুইবার করে পানি ছিটাতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার পরের দুই সপ্তাহের মধ্যে পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ও ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের দুই মেয়র ও নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন হাইকোর্ট।
Advertisement
অন্যদিকে, বায়ুদূষণ নিয়ে রুলও জারি করেছেন আদালত। ঢাকা সিটির বায়ুদূষণ রোধে প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং ঢাকা শহরের বায়ুদূষণ বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না- তা জানতে চেয়েছেন ওই রুলে।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে বন ও পরিবেশ সচিব, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক, পরিচালক, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, নির্বাহী কর্মকর্তা, ডিএমপি কমিশনার, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ- রাজউক চেয়ারম্যানসহ ১১ বিবাদীকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
ঢাকা সিটির বায়ুদূষণ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি এ এফ নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
Advertisement
আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. ছারওয়ার আহমেদ, একলাস উদ্দিন ভূইয়া ও রিপন বাড়ৈ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সাইফুর রহমান।
মনজিল মোরসেদ আরও জানান, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ঢাকার বায়ুদূষণ নিয়ে প্রকাশিত খবর ও প্রতিবেদন সংযুক্ত করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, এখলাছ উদ্দিন ভূইয়া ও রিপন বাড়ৈ গত রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিট আবেদন করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত এই আদেশ দেন।
মনজিল মোরসেদ বলেন, পরিবেশ আইনের অধীনে ১৯৯৭ সালে যে বিধিমালা হয়েছ, সেখানে বায়ুতে ক্ষতিকর উপাদানের মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়াও চলমান বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের ওয়ার্ক অর্ডারে বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণের শর্ত উল্লেখ থাকলেও তারা তা মানছেন না। এ কারণে ভয়াবহ বায়ু দূষণের শিকার হচ্ছে ঢাকা মহানগরীর লাখ লাখ মানুষ।
এ আইনজীবী বলেন, সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বেঁচে থাকা মানুষের মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত। এভাবে বায়ু দূষণ ঘটিয়ে মানুষের বেঁচে থাকাকেই দুর্বিষহ করে তুলছে। সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, আইন ব্যতীত জীবন ও ব্যক্তি-স্বাধীনতা হইতে কোনো ব্যক্তিকে বঞ্চিত করা যাইবে না।
এফএইচ/এসআর/জেএইচ/এমকেএইচ