মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে রাজধানীতে পেঁয়াজের ঝাঁজ বেড়েছে অবাক করার মতো। কেজি প্রতি ২৫ টাকা দর বেড়ে ৯০ টাকা হওয়ায় এবার দাম নিয়ন্ত্রণে টিসিবির মাধ্যমে আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল রাখতে বাজারে নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি বন্দরগুলোকে পেঁয়াজের চালান দ্রুত ছাড় করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন। একই সঙ্গে আমদানিতে সহজে ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। ভারত সরকার শনিবার দ্বিতীয় দফায় পেঁয়াজের রফতানি মূল্য প্রতি টনে ২৭৫ ডলার বাড়িয়েছে। ফলে পেঁয়াজের ন্যূনতম রফতানি মূল্য প্রতি টন ৭০০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এর আগে প্রথম দফায় গত ২৬ জুন রফতানি মূল্য ২২৫ ডলার বাড়িয়ে ৪২৫ ডলার করে ভারত সরকার। জানা যায়, রফতানি নিরুৎসাহিত করতে ভারত দাম বাড়িয়েছে। উৎপাদন কম হওয়ায় দেশটি আফগানিস্তান, মিশর ও পাকিস্তান থেকে পেঁয়াজ আমদানি করছে। রফতানি মূল্য বাড়ানোর ফলে বাংলাদেশসহ প্রতিবেশি দেশগুলোর বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করে। পেঁয়াজের জন্য ভারতের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল বাংলাদেশ। তাই সবচেয়ে বিপদে পড়েছে বাংলাদেশ। রাজধানী কারওয়ান বাজারে সোমবার দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়। এদিকে সরকারি বিপণনকারী সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অফ বাংলাদেশের (টিসিবি) সোমবার বাজারদরের যে তথ্য দিয়েছে তাতে দেখা যায়, প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। দেশি পেঁয়াজের দর ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের দ্রব্যমূল্য মনিটরিং সেলের হিসাবে বাংলাদেশে পেঁয়াজের চাহিদা বছরে প্রায় ২২-২৩ লাখ টন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসাবে, বাংলাদেশের কৃষকরা গত মৌসুমে ১৯ লাখ ৩০ হাজার টন পেঁয়াজ উৎপাদন করেছেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মনে করছে, দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন ও আমদানি ভালো থাকায় দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। তাই সোমবারের জরুরি বৈঠকে অতিরিক্ত মুনাফা রোধে অভিযান পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়ায় দেশে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। তবে এই বাড়তি দামে বিক্রির যৌক্তিকতা নেই। বর্তমানে দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। এখন আমদানি না হলেও যে পেঁয়াজ আছে, তা দিয়ে এপ্রিল পর্যন্ত চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে।এসআই/আরএস/এমএস
Advertisement