শীতের সুস্বাদু ফল বরই (কুল)। দেশে এখন টক-মিস্টি, দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন জাতের বরই চাষ হয়ে থাকে। এ বরই চাষ করে এক মৌসুমে প্রায় ১০ লাখ টাকা আয় করেছেন রাজবাড়ীর আব্দুর রহমান মোল্লা।
Advertisement
রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের উদয়পুর এলাকার আব্দুর রহমান মোল্লা ২০০৬ সালে বিদেশ থেকে ফিরে নিজে কিছু করার প্রত্যাশায় ২২ শতাংশ জমিতে শুরু করেন বরই চাষ। শুরুতেই তিনি আয় করেন ১ লাখ টাকা। এরপর থেকে প্রতি বছরই তিনি বাড়াতে থাকেন বরই চাষ। বর্তমানে ১৪ বিঘা জমিতে চাষ করছেন। এতে খরচ হয়েছে ৫ লাখ টাকা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বরইয়ের বাম্পার ফলন হওয়ায় খুশি আব্দুর রহমান। এ বছর যে ফলন হয়েছে তাতে ১৪-১৫ লাখ টাকার বরই বিক্রি করবেন বলে তিনি আশাবাদী।
এ বছর তিনি ভারতীয়, কাশ্মিরি, নারিকেল, আপেল, বাউ ও থাই কুলের চাষ করেছেন। বরই পাকা শুরু করলে বাগান থেকেই পাইকারি দরে মন হিসেবে ব্যাপারিদের কাছে বিক্রি করেন। যা জেলা শহরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নেওয়া হচ্ছে। তার দেখাদেখি এ অঞ্চলের অনেকে এখন বরই চাষ শুরু করেছেন। এ অঞ্চলে এখন ১০০ বিঘার উপর জমিতে বরই চাষ হচ্ছে।
> আরও পড়ুন- শীতে ব্রোকলি চাষ করবেন যেভাবে
Advertisement
তিনি কোন প্রশিক্ষণ ছাড়াই বরই চাষ করেছেন। সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছা শক্তির ওপর ভিত্তি করে বরই চাষ করে তিনি এখন স্বাবলম্বী। এমনকি রাজবাড়ীর সফল বরই চাষি।
আব্দুর রহমান মোল্লা জানান, ২০০৬ সালে ২২ শতাংশ জমিতে বরই চাষ শুরু করেন। প্রথম বছরেই লাভ হয় ১ লাখ টাকা। পরে তিনি প্রতিবছর চাষ বাড়াতে থাকেন এবং লাভবান হন। এ বছর ১৪ বিঘা জমিতে চাষ করেছেন। এতে খরচ হয়েছে প্রায় ৫ লাখ টাকা। ফলন অনুযায়ী বিক্রি করবেন প্রায় ১৫ লাখ টাকা।
তিনি জানান, বাগান পরিচর্যার জন্য মোট ৯ জন কাজ করেন। এ বছর ফলন অনেক ভালো হয়েছে এবং দামও ভালো পাবেন। আগামীতে তিনি আরো বরইয়ের চাষ করবেন। তবে বরই চাষ করতে কম সুদে ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার জন্য তিনি সরকারের কাছে অনুরোধ জানান।
> আরও পড়ুন- টমেটোর ভালো ফলন পেতে যা করবেন
Advertisement
অপর চাষি ইদ্রিস আলী জানান, তিনি এবছর ৭০ শতাংশ জমিতে বরই চাষ করেছেন। ২০১৫ সাল থেকে তিনি বরই চাষ করেন। এ বছর যে ফলন হয়েছে তাতে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা বিক্রি হবে। খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ২ লাখ টাকা আয় হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. ফজলুর রহমান বলেন, ‘রাজবাড়ীর চাষিরা এখন কুল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন এবং বেশ লাভবান হচ্ছেন। এবছর রাজবাড়ীতে বিভিন্ন জাতের প্রায় ৫৫ হেক্টর জমিতে কুলের চাষ হয়েছে। শুধু সদর উপজেলাতেই ২৩ হেক্টর জমিতে কুল চাষ হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত কৃষকদের পরামর্শ দেওয়ায় কুল চাষ দিনদিন বাড়ছে।’
রুবেলুর রহমান/এসইউ/এমএস