আন্তর্জাতিক

স্ত্রী হত্যায় স্বামীর ফাঁসি ইসলামি আইনের লঙ্ঘন : আমিরাত

>>আবু ধাবির অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, মৃত্যুদণ্ডের আদেশ ইসলামি আইনের পরিপন্থী।

Advertisement

ভুল বোঝাবুঝি থেকে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আদালতে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ পেয়েছিলেন স্বামী। সুপ্রিম কোর্টে ফাঁসির দণ্ড বাতিলের আবেদন করেছিলেন অভিযুক্ত ব্যক্তি। ফাঁসির সেই আদেশ বাতিল করে দিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সুপ্রিম কোর্ট বলছে, স্ত্রী হত্যায় স্বামীর ফাঁসির সাজা ইসলামি আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

ওই মামলায় পুনরায় শুনানির আদেশ জারি করে আবু ধাবির সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, ইসলামি আইন অনুযায়ী, মায়ের মৃত্যুর জন্য পিতার মৃত্যুদণ্ড চাইতে পারে না কোনো সন্তান।

এর আগে এই দম্পতির সন্তানরা মৃত্যুদণ্ড বাতিলের জন্য টাকার বিনিময়ে বাবাকে ক্ষমা করতে অস্বীকৃতি জানায়। ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের মাকে হত্যার জন্য বাবার মৃত্যুদণ্ড চান তারা।

Advertisement

আরও পড়ুন : ‘কলঙ্কিত পুরুষের জীবনসঙ্গী প্রিয়াঙ্কা’

আদালতের নথিতে বলা হয়েছে, আরব বংশোদ্ভূত ওই ব্যক্তি আমিরাতের উত্তরাঞ্চলে তার বাড়িতে স্ত্রীর ওপর হামলা চালায়। বৈবাহিক ভুল বোঝাবুঝি থেকে স্ত্রীর বুক ও শরীরের অন্যান্য অংশে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেন তিনি। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় স্ত্রী।

আদালতের প্রসিকিউটর বলেছেন, স্ত্রীকে পূর্ব-পরিকল্পিত উপায়ে হত্যা করেছেন ওই ব্যক্তি। দীর্ঘদিনের ভুল বোঝাবুঝি থেকে ক্ষোভের বশে স্ত্রীকে হত্যা করেছেন বলে স্বীকার করেছেন তিনি। ওই দম্পতির প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশিরা বলেছেন, তারা চিৎকার শোনার পর দরজা খুলে ঘরে প্রবেশ করে ওই নারীকে মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান। এসময় তার স্বামীকে রক্তমাখা ছুরি হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। সরকারি কৌসলীরা আমিরাতের ইসলামি শরীয়াহ আইনের ৩৩২/১-২ ও ১২১/১ দণ্ড বিধি অনুযায়ী অভিযুক্ত ব্যক্তির সাজা দাবি করেছেন। পূর্বপরিকিল্পত হত্যার দায়ে ওই ব্যক্তিকে আবু ধাবির ফৌজদারি আদালত ও আপিল বিভাগ দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন : একসঙ্গে পাঁচ সন্তানের জন্ম দিলেন রুবিনা

Advertisement

আমিরাতের অ্যাটর্নি জেনারেল এই রায় চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন। এই রায়কে ইসলামি আইনের পরিপন্থী উল্লেখ করে পর্যালোচনার দাবি জানান তিনি। আমিরাতের ইসলামি শরীয়াহ আইনে বলা হয়েছে, স্বামী যদি স্ত্রীকে হত্যা করেন এবং স্ত্রীর ঔরসজাত কোনো সন্তান তা ছেলে অথবা মেয়ে হোক না কেন; তারা পিতার মৃত্যুদণ্ড চাইতে অথবা প্রতিশোধ নিতে পারবে না।

পরে আবু ধাবির সুপ্রিম কোর্ট ওই ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ ইসলামি আইনের পরিপন্থী উল্লেখ করে সাজা বাতিল করেন। একই সঙ্গে মামলার রায় পর্যালোচনার জন্য পুনরায় আদেশ জারি করেন।

সূত্র : খালিজ টাইমস।

এসআইএস/পিআর