হঠাৎ নামা ঢলে এক প্রকার জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। শুক্রবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের এ ঢল নামে। সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার মধ্যে জনসমুদ্রে পরিণত হয় মেলা প্রাঙ্গণ। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যেন কোথাও তিল ধারণেই ঠাঁই নেই।
Advertisement
ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকেই মেলায় আসতে থাকেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। দুপুর ১২টার পর থেকে মেলায় ভিড় বাড়তে থাকে। তবে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ঢল নামতে শুরু করে জুমার নামাজের পর। আর শেষ বিকালে উপচে পড়া ভিড়ে জনসমুদ্রে পরিণত হয় মেলা প্রাঙ্গণ।
ক্রেতা-দর্শনার্থীদের এমন ঢলে বিকেলে টিকিট কেটে মেলায় প্রবেশ করতেও অনেকেই বিড়ম্বনায় পড়েন।
যাত্রাবাড়ি থেকে আসা হিমা খাতুন বলেন, ‘৩টার দিকে মেলায় প্রবেশ করেছি। যখন মেলায় আসি তখন মোটামুটি ভিড় ছিল। মেলার ঘুরতে ঘুরতেই দেখলাম হঠাৎ লোকে লোকারণ্য হয়ে গেল। পরিস্থিতি এমন যে জনসমুদ্র বললেও ভুল হবে না। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে একজন আরেকজনের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি না করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।’
Advertisement
মিরপুর থেকে আসা হৃদয় বলেন, ‘পাঁচ বন্ধু মিলে এসেছি। যখন মেলায় আসি তখন দর্শনার্থী অনেক কম ছিল। কিন্তু বিকেলে এতো দর্শনার্থী যে কোথা থেকে আসলো কিছুই বুঝতে পারছি না। আমরা মেলায় প্রবেশ করে পূর্বদিক ঘুরে মাঝ মাঠে আসতেই দেখি স্রোতের মতো মানুষ প্রবেশ করছে। আধাঘণ্টার মধ্যে দর্শনার্থীতে ভরে গেছে মেলা। এ দৃশ্য চোখে না দেখলে সহজে বিশ্বাস করা যাবে না।’
এদিকে ছুটির দিনে মেলায় দর্শনার্থীদের ঢল নামার পাশাপাশি বিক্রিও বেড়েছে। সকালে প্রথম একঘণ্টা স্টলের বিক্রয় কর্মীরা কিছুটা অলস সময় পার করলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তাদের কর্মচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। আর বিকেলে দর্শনার্থীদের ঢল নামার পর পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে তাদের যেন এক সেকেন্ড বিশ্রাম নেয়ারও সুযোগ নেই।
ক্রেতা-দর্শনার্থীর বিষয়ে জুয়েলারি বিক্রেতা মো. রবিউল বলেন, ‘ভাই দেখছেন তো কি পরিস্থিতি। এমন অবস্থায় কথা বলবো কি করে। আপনার কিছু বলার থাকলে পরে বলেন।’
খেলনা বিক্রেতা জমির উদ্দিন বলেন, ‘আজ আল্লাহর রহমতে বিক্রি বেশ ভালো। গত শুক্র ও শনিবারও ভালো বিক্রি হয়েছে। তবে আগের দিনের তুলনায় আজ বিক্রি অনেক ভালো। আশা করছি সামনের দিনগুলোতে বিক্রি আরও ভালো হবে।’
Advertisement
ছোট প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বড় প্রতিষ্ঠানেও ক্রেতা-দর্শনার্থীদের প্রচণ্ড ভিড় দেখা যায়। প্রাণের স্টলে দায়িত্ব পালন করা এক বিক্রয় কর্মী বলেন, ‘মেলার প্রথম থেকেই বিক্রি ভালো। তবে স্বাভাবিক দিনের তুলনায় শুক্র ও শনিবার অনেক বেশি বিক্রি হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে গত শুক্রবারের তুলনায় আজ মনে হচ্ছে মেলায় ভিড় বেশি।’
মেলার গেট ও পার্কিং স্থানের দায়িত্ব পালন করা একাধিক কর্মী বলেন, ‘দুপুর ২টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের চাপ ছিল অনেকটা স্বাভাবিক। তবে বিকেল ৪টার পর দর্শনার্থীদের চাপ বহুগুণে বেড়ে যায়। ফলে দর্শনার্থীদের গাড়ি পার্কিংয় করতে কিছুটা হিমশিম খেতে হয়।’
গেটে দায়িত্ব পালন করা একজন জানান, ‘ইতিমধ্যে দুটি শুক্র ও শনিবার চলে গেছে। ওই চারদিন দর্শনার্থীদের ভালো ভিড় ছিল। তবে আজ গত শুক্রবারের তুলনায় দর্শনার্থী অনেক বেশি।’
এমএএস/এএইচ/পিআর