মালয়েশিয়া সারডাং জেনারেল হাসপাতালের বিছানায় এক নিথর দেহ। ১৯৭১ সালে যুদ্ধের ময়দানে ইলিয়াছ আহমেদ রফিকের যে কাঁধে বন্দুকের বেয়নেট গর্জে উঠতো, সেই কাঁধ এখন নির্জীব। জীবনের তাগিদে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমানো ৬০ বছর বয়সী মুক্তিযোদ্ধার দীর্ঘ শরীর মৃত্যুযন্ত্রণার লড়াইয়ে হেরে গেছে।সোমবার মালয়েশিয়া সময় বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে পৃথিবীর মায়া ছেড়ে সবাইকে কাদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন এই মুক্তিযোদ্ধা (ইন্নালিল্লাহি.......ওয়াইন্নাইলাইহি রাজিউন)। গত ১৬ জুলাই রাতে ঈদের আগের দিন ইফতারির সময় হঠাৎ করেই ব্রেন স্ট্রোক করেন এ প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধা।পরে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে হাসপাতাল কুয়ালালামপুরে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অর্থের অভাবে চিকিৎসা চলছিল না সঠিকভাবে। গত ২ আগস্ট মুক্তিযোদ্ধা রফিককে কুয়ালালামপুর জেনারেল হাসপাতাল থেকে রিলিজ করে দেয়া হয়। এরপর শুরু হয় এই মুক্তিযোদ্ধাকে বাঁচানোর এক কঠিন লড়াই। রফিকের বাড়ি বগুড়ার নাটাইপাড়ার বৌ-বাজার এলাকায়।২০১১ সাল থেকে মালয়শিয়ার কুয়ালালামপুরে বসবাস করছেন রফিক। তিনি বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মালয়েশিয়া কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক। অত্যন্ত বিনয়ী ও মিষ্টিভাষী এ মুক্তিযোদ্ধা দুই সন্তানের জনক। মেয়ে বিয়ে দিয়েছেন এবং ছেলে বর্তমানে দেশে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টিং পড়ছেন।দেশে বিভিন্ন সময় ব্যবসায়িক ব্যর্থতায় দেশ ছাড়তে বাধ্য করে তাকে। মালয়েশিয়ায় গেলেও বার্ধক্যের কারণে কোনো কাজ-কর্ম করতে পারতেন না, যার কারণে প্রবাসে অনেকটা অনাহারে-অর্ধাহারে তার দিন কাটতো।মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ কমিউনিটি ও প্রবাসীদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় তার চিকিৎসা চলছিল কুয়ালালামপুর হসপিটাল, সেভয় নার্সিং হোম এরপর ইউনিভার্সিটি হসপিটাল হয়ে সার্ডাং জেনারেল হাসপাতালের ইমারজেন্সিতে।কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে আর বাঁচানো গেলো না। সবাইকে কাদিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে । তার মরদেহ দেশে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্বা কমান্ডার দেলোয়ার হোসেন মজনু।বিএ
Advertisement