জাতীয়

এখন দালাল কত, আগের মতোই আছে?

রাজধানীর বনানীতে নবনির্মিত বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ভবনে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বুধবার মতবিনিময় সভা করছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

Advertisement

এ সময় তিনি কর্মকর্তাদের কথা শুনে পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি বলেছেন, বিআরটিএ-তে পুরোপুরি ডিজিটাইলেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যার ফলে দুর্নীতি-অনিয়ম কমে আসবে। বিআরটিএ-তে অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে খুবই বিব্রত ছিলাম। বিভিন্ন সময় আমি অভিযান চালিয়েছি, ভিজিট করেছি আগের তুলনায় পরিস্থিতি অনেকটা ভালো। আগের মত অতটা অভিযোগ নেই। তারপরও ভিতরে সমস্যা আছে। যারা অনিয়ম দুর্নীতি করছেন তারা সংশোধন হয়ে যান।

এ সময় হঠাৎ করেই ওবায়দুল কাদের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলে উঠেন, মিরপুর বিআরটিএ এর মাসুদ কই? (মিরপুর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মাসুদ আলম)। কর্মকর্তাদের ভিড়ের মধ্যে থেকে তখন মন্ত্রীর সামনে এসে হাজির হন মাসুদ। মিরপুর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মাসুদ আলমকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিআরটিএ তে এখন দালাল কত, আগের মতোই আছে?।’

মন্ত্রীর এমন প্রশ্নে অনেকটা ভ্যাবাচেকা হয়ে মাসুদ আলম বলেন, স্যার প্রতিদিনই আমরা দালাল ধরছি। এমন কী বিআরটিএ বাইরে হারম্যান মেইনার স্কুলের আশপাশে থেকেও আমরা দালাল ধরছি। ভেতরে তো কোনো দালাল নেই, বাইরেও নেই। আমাদের ম্যাজিস্ট্রেট ও আনসাররা দালালদের ধরে প্রতিদিনই।

Advertisement

পাশ থেকে বিআরটিএর আরেক কর্মকর্তা বলে উঠেন মাসুদ সাহেব থাকাকালে মিরপুর বিআরটিএর অনেক উন্নতি হয়েছে। এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ওবায়দুল কাদের বলে উঠেন, উন্নতি হয়েছে কিন্তু মাসুদ মিরপুরে পার্মানেন্ট কেন? এতবার বদলি হয় সে আবার ফিরে আসে মিরপুরে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, মিরপুর বিআরটিএ দালালদের চেনে মাসুদ? চেনো না? এমন প্রশ্নের উত্তরে উপ-পরিচালক মাসুদ আলম বলেন, স্যার আমাদের ম্যাজিস্ট্রেট, আনসাররা প্রতিদিনই দালালদের ধরছে। দালালরা আমাদের কাছে আসতেই পারে না। ওবায়দুল কাদের বলেন, তুমি এত দিন এখানে আছো দালালদের তো চেনার কথা।

এর আগে নবনির্মিত বিআরটিএ ভবনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের নির্বাচনী অঙ্গীকার-ওয়াদা পূরণ করতে চাই। তাই আপনারা স্বচ্ছতার সঙ্গে আপনাদের নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করুন। নতুন সরকারের বার্তা আমরা দুর্নীতি মুক্ত করতে চাই। বিআরটিএতে এসে মানুষ যেন হয়রানি শিকার না হতে হয়। আগে এক সময় গাড়ি না এনেও বিআরটিএ থেকে গাড়ির ফিটনেস নেয়া যেত। এখন কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। আমি পুরোপুরি পরিবর্তন চাই।

মন্ত্রী আরও বলেন, বিআরটিএর ভেতরে-বাইরে দালালের দৌরাত্ম্য। ভেতরের সঙ্গে যোগসাজাশ না থাকলে কীভাবে বাইরে থেকে দালালরা ভেতরে এসে কাজ করে যায়। এ বিষয়ে নিজেরা সংশোধন হয়ে যান। বিআরটিএ তে যেন আর দালাল না দেখি। বিআরটিএর যেসব কর্মকর্তা দুর্নীতি করেন তারা সংশোধন হয়ে যান আর তা হলে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিআরটিএ ডিজিটাইলেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যোগ্য জনবল বাড়ানো হবে। প্রতিষ্ঠানটি গতি পেতে যা যা করা দরকার সবই করা হবে, যেন জনগণের হয়রানি না হয়ে সেবার মান বৃদ্ধি পায়।

Advertisement

সভায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এএস/জেএইচ/আরআইপি