আন্তর্জাতিক

সহকর্মীকে অযাচিত স্পর্শ, পাবলিক প্রসিকিউটরের ২ বছরের জেল

যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে গড়ে ওঠা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের আন্দোলন #মি-টু ঝড়ে ফেঁসে গেলেন দক্ষিণ কোরিয়ার এক জ্যেষ্ঠ সরকারি প্রসিকিউটর। ক্ষমতার অপব্যবহার করে অধীনস্ত এক জুনিয়র নারী সহকর্মীকে যৌন নিপীড়ন ও বদলির দায়ে বুধবার সাবেক এই কর্মকর্তাকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। সহকর্মীকে নিপীড়নের এই ঘটনায় দক্ষিণ কোরিয়ায় #মি-টু আন্দোলন শুরু হয়েছিল।

Advertisement

এক সহকর্মীর বাবার অন্তেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে অন্য এক জুনিয়র নারী সহকর্মীকে অযাচিতভাবে স্পর্শ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে বদলি করার দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে আহন তায়ে-জিউন নামের ওই প্রসিকিউটরকে। সিও জি-হিউন নামের ওই জুনিয়র নারী সহকর্মী প্রসিকিউটর জিউনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।

আরও পড়ুন : আত্মহত্যা করেছেন সৌদির সেই দুই বোন?

অভিযোগ দায়েরের কারণে ওই নারীকে প্রাদেশিক একটি পদে বদলি করেন প্রসিকিউটর জিউন। বছরের পর বছর ধরে নীরবে এই ভোগান্তি সহ্য করে যান হিউন। তবে গত বছরের জানুয়ারিতে প্রথমবারের মতো তিনি এই বিষয়ে মুখ খোলেন দেশটির একটি টেলিভিশন চ্যানেলের লাইভ অনুষ্ঠানে। সেখানে তিনি প্রসিকিউটর জিউনের হাতে কীভাবে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন তা তুলে ধরেন।

Advertisement

দক্ষিণ কোরিয়ার মতো রক্ষণশীল সমাজে তার এই সাক্ষাৎকার বিরল একটি ঘটনা; যেখানে নারীরা যৌন হয়রানির শিকার হলেও লজ্জার ভয়ে মুখ খোলেন না। কিন্তু হিউনের এই সাক্ষাৎকারের পর দেশটির বিনোদন, সাহিত্য থেকে রাজনীতি এমনকি ধর্মীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও অনেক নারী যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনেন। সেই সময় দেশটিতে প্রবলভাবে নাড়িয়ে দেয়া এই নারীর সাক্ষাৎকারের পর শুরু হয় #মি-টু আন্দোলন।

আরও পড়ুন : মৃত্যুর কারণ হতে পারে কবুতরের সংস্পর্শ!

প্রসিকিউটর আহন তায়ে-জিউনকে ২০১৭ সালে দুর্নীতির পৃথক একটি মামলায় চাকরিচ্যুত করা হয়। দেশটির আইনে যৌন হয়রানির অভিযোগ এক বছরের মধ্যে দায়েরের কথা উল্লেখ আছে। কিন্তু ওই নারী সহকর্মী যৌন নিপীড়নের ব্যাপারে অভিযোগ এনেছেন এই সময়ের পরে। যে কারণে তাকে অভিযুক্ত করা যাচ্ছিল না।

পরে দেশটির সরকারি আইনজীবীরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে সিওকে বদলির ঘটনায় জিউনকে দোষী সাব্যস্ত করেন। সিউলের সেন্ট্রাল জেলা আদালতে রায় ঘোষণার সময় বিচারক লি সং-জু বলেন, অভ্যন্তরীণ অভিযোগের পরিণতির ভয়েই ওই নারী সহকর্মীকে সিউল থেকে বদলি করেছিলেন প্রসিকিউটর আহন। এর পক্ষে যথেষ্ঠ প্রমাণ আছে।

Advertisement

তিনি বলেন, এই ঘটনা সিওর জন্য প্রচণ্ড মানসিক যন্ত্রণার কারণ।

সূত্র : এএফপি।

এসআইএস/জেআইএম