দেশজুড়ে

ইউপি চেয়ারম্যানের কাণ্ড দেখে বিধবার সংবাদ সম্মেলন

যশোরের চৌগাছায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে আসাদ খান নামে এক যুবককে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে জগদীশপুর ইউপি চেয়ারম্যান তবিবর রহমান খানের বিরুদ্ধে। রক্তাক্ত জখম করা হলেও পুলিশ এ ঘটনায় মামলা নিচ্ছে না। অসহায় পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

Advertisement

মঙ্গলবার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে আসাদ খানের পরিবারের পক্ষ থেকে এই দাবি করা হয়। তবিবর রহমান খান ও আসাদ খান পরস্পর চাচা ভাইপো হন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান তবিবর রহমান খান। তিনি দাবি করেছেন, জমি নিয়ে কোনো বিরোধ নেই। মারপিটের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট। ওই ছেলেটা দুর্দান্ত খারাপ। সে আমাকে মারার জন্য গাছি দা নিয়ে বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় এলাকাবাসী তাকে থামাতে গেলে তাদের উপরও চড়াও হয়। এলাকাবাসী তাকে গণপিটুনি দিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে চৌগাছা থানা পুলিশের ওসি রিফাত খান রাজিব জানান, আসাদ খানকে মারপিটের ঘটনায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে চেয়ারম্যান তবিবর রহমান খানের বাড়িতে হামলা ও ভাচুরের ঘটনায় ওই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে চৌগাছার মাড়ুয়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের স্ত্রী রাহেলা খানম অভিযোগ করেন, সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধে ৬ নম্বর জগদীশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তবিবর রহমান খান তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমার ও আমার ছেলের উপর আক্রমণ করেছে। এটি শুরু হয় ২০১২ সালে। তার জমির পাশে আমার স্বামীর দশ শতক জমি ছিল। এই জমি কেনার জন্য চেয়ারম্যান আমাকে অনেকবার বলেছে। কিন্তু চেয়ারম্যানকে না দিয়ে জমি আমার সেজো ছেলের কাছে বিক্রি করেছি। এতে চেয়ারম্যান ক্ষুব্ধ হয়। এরপর থেকে তারা ধীরে ধীরে আমার জমির সীমানা দখল করতে থাকে। আমার বাড়ির সামনে সীমানা প্রাচীর দেয়। আমরা বাধা দিই। এরপর চেয়ারম্যান আমাদের উপর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য চলাচলের পথে গ্যারেজের নামে একটি ঘর তৈরি করে। আমার পরিবার অন্যের জমির উপর দিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হয়। তাতেও তারা দমে যায়নি। অন্যের জমির উপর দিয়ে যাতায়াত করি, তাদেরকেও চাপ দিতে থাকে পথ বন্ধ করে দেয়ার জন্য। চেয়ারম্যান হুমকি দিয়েছে আমাদের ভিটে ছাড়া করে ছাড়বে।

সর্বশেষ ১৯ জানুয়ারি চেয়ারম্যান তবিবর রহমান খান তার লোকজন নিয়ে আমার বাড়ির উঠানের উপর নতুন করে পিলার ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ শুরু করে। আমার ছেলে আসাদ খান বাধা দিলে চেয়ারম্যান তাকে মারতে মারতে বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে তাকে মারাত্মক জখম করা হয়। অমানবিক নির্যাতনে অজ্ঞান হয়ে যায় সে। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে সে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। পুলিশ পাহারায় তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় চৌগাছা থানায় মামলা করতে গেলে অদৃশ্য কারণে পুলিশ মামলা নিচ্ছে না। আমি একজন অসহায় বিধবা, চেয়ারম্যানের নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রাহেলা খানমের মেয়ে নাসিমা খানম। এসময় পুত্রবধূ উর্মি খান উপস্থিত ছিলেন।

এ প্রসঙ্গে চৌগাছা থানা পুলিশের ওসি রিফাত খান রাজীব বলেন, চেয়ারম্যান তবিবর রহমান খানের বাড়িতে ওই যুবক (আসাদ খান) হামলা চালিয়েছিল। স্থানীয় লোকজন তাকে পুলিশে সোপর্দ করে। এ ঘটনায় গত ২০ জানুয়ারি চেয়ারম্যান অভিযোগ দেন। সেটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। তবে যুবককে মারপিটের ঘটনায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Advertisement

মিলন রহমান/এমএএস/এমএস