রাজনীতি

‘বিএনপির অবস্থা শিল্পী জয়নুলের কাদায় আটকে পড়া গরুর গাড়ির মতো’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘নির্বাচনের পর বিএনপিকে দেখলে মনে হয়, শিল্পী জয়নুলের কাদায় আটকে পড়া গরুর গাড়ির মতো। ভুলের কাদায় আটকে আছে বিএনপি।’

Advertisement

মঙ্গলবার রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি) সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের কালজয়ী চিত্রকর্ম ‘সংগ্রাম’। যেখানে দেখা যায়- কাদায় আটকে পড়া একটি গরুর গাড়ি প্রাণপণে ঠেলে তোলার চেষ্টা করছেন গাড়োয়ান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাদের (বিএনপি নেতাদের) এখনকার কথাবার্তা ও আচরণ দেখে ভুল থেকে শিক্ষা নেয়ার কোনো ইঙ্গিতও দেখা যাচ্ছে না। বিএনপি মহাসচিবের মুখে যা শোনা যাচ্ছে তা শোচনীয় ব্যর্থতার প্রলাপ।’

Advertisement

বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে শোনা যাচ্ছে। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনে আওয়ামী লীগ কোনো উদ্যোগ নেবে কি না- জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এই সরকারের আমলেই গত উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিয়েছে। ওই উপজেলা নির্বাচনের ফলাফলে বিএনপির নির্বাচিতদের সংখ্যা কিন্তু কম নয়। রুলিং পার্টির প্রায় সমান সমান আসন পেয়েছে তারা।’

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের কালজয়ী চিত্রকর্ম ‘সংগ্রাম’

তিনি আরও বলেন, ‘গত সিটি কর্পোরেশনের আগে নির্বাচনেও তারা ৫টি সিটিতে জয়লাভ করেছিল। জাতীয় নির্বাচনের আগে যে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হয়েছে সেখানেও বিএনপি কিন্তু সিলেট সিটিতে জয় পেয়েছে। এখন তারা ঠিক কী কারণে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না তা তারাই ভালো বলতে পারবে এবং এর সিদ্ধান্ত বিএনপিই নেবে। সেখানে আমাদের কোনো বক্তব্য নাই। তবে নির্বাচনে অংশ নেয়া তাদের অধিকার।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘একটা কথা স্পষ্ট করে বলছি- আজকে বিএনপি যে জায়গা থেকে উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নেয়ার কথা বলছে, এই জায়গায় আওয়ামী লীগ থাকলে আমরা অংশ নিতাম।’

Advertisement

উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের পাশাপাশি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের পদেও দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের পক্ষে মত দেন তিনি। তবে নির্বাচন কমিশনই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানান।

নির্বাচনে বিপর্যয়ের কারণে বিএনপির মহাসচিব পদে পরিবর্তন আসতে পারে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে- এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব পদে পরিবর্তন আসবে কি আসবে না সেটার মূল্যায়ন কিংবা নাক গলানোর প্রয়োজন আওয়ামী লীগের নাই। আমি শুধু রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়েছিলাম।’

মানুষ হিসাবে মির্জা ফখরুল ভালোই

মির্জা ফখরুল সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি মির্জা ফখরুল সাহেবের পক্ষ নিলে কিন্তু তিনি দলের ভেতরেই সমস্যায় পড়বেন। তবে ব্যক্তিগতভাবে তিনি সজ্জন, মানুষ হিসেবে ভালোই। তবে তিনি বিএনপির জেনারেল সেক্রেটারি হিসেবে কেমন, বিএনপি যে রকম লোক চায়, বিএনপির চাহিদা পূরণে সফল কি ব্যর্থ তা বিএনপিই বলবে। সেটা আমি তো বলতে পারি না।’

তিনি বলেন, ‘আমি ওনার (মির্জা ফখরুল) পদত্যাগ দাবি করবো? এটা তো সৌজন্যের বাইরে। এটা করা উচিতও হবে না। পারসোনালি তার বিরুদ্ধে আমার কোনো রাগ বা খেদ নাই। তিনি যে দল করেন, সেই দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। সেই দলের হয়েই তাকে বলতে হয়।’

রিজভীর প্রতি ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তার (ফখরুলের) ল্যাঙ্গুয়েজ কিন্তু আরও অনেকের মতো বা তাদের আবাসিক প্রতিনিধির মতো নয়। এটা কিন্তু ভালো। কারণ তাদের যে আবাসিক প্রতিনিধি আছেন, তার মতো নোংরা ভাষা অন্তত ফখরুল সাহেবের মুখে শুনিনি।’

জেইউ/এমবিআর/পিআর