‘আমার বাবা কিশোর বয়সে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। আজীবন তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করেছেন। স্বাধীনতা বিরোধীদের শাস্তির জন্যও তিনি সোচ্চার ছিলেন। সে জন্য তাকে অনেক মূল্য দিতে হয়েছে।
Advertisement
দেশের গান করে মানুষের মধ্যে দেশপ্রেমের উৎসাহ ছড়িয়েছেন তিনি সারাজীবন। এখন তো স্বাধীনতার চেতনাকে লালন করা দল সরকারে আছে। তাদের কাছে আমি বাবার জন্য মিরপুর বুদ্ধিজীবী করবস্থানে এক টুকরো চিরস্থায়ী জায়গা চাই।’
বাবাকে হারিয়ে শোকে কাতর বুলবুল পুত্র সামির আহমেদ এভাবেই জাগো নিউজকে জানালেন তার প্রত্যাশার কথা।
আজ মঙ্গলবার ভোররাতে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান গানের কিংবদন্তি পুরুষ আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। রাজধানীর আফতাব নগরে তার বাসভবনটি শোকের চাদরে ঢাকা পড়েছে। একমাত্র পুত্র সামির বাকরুদ্ধ হয়ে আছেন। তার চোখে জল নেই। কোরো স্বান্তনারও প্রয়োজন পড়ছে না।
Advertisement
তার বাবার দীর্ঘদিনের সহকর্মী ও বন্ধু কুমার বিশ্বজিৎ এবং এন্ড্রু কিশোর চোখের কোণে জল নিয়ে নির্বাক হয়ে বসে আছেন। পাশেই বসা সামির। জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে জানালেন, ‘সারাটা জীবন বাবা মানুষ আর দেশের জন্য ভেবেছেন। তাকে যারা চেনেন, জানেন সেটা তারা একবাক্যে স্বীকার করবেন। অনেক কষ্ট করেছেন আমার। চাইলেই বিত্ত বৈভবের সাম্রাজ্যে জীবন কাটাতে পারতেন। কিন্তু তিনি তেমনটা ছিলেন না। আমাকে মানুষ করেছেন সাধারণ আর দশটা ছেলের মতো।
আমি দেখেছি বাবাকে সবাই একজন ভালো মানুষ হিসেবে, সাহসী দেশপ্রেমিক শিল্পী হিসেবে সম্মান করেন। সেজন্য আমি সরকারের কাছে দাবি করছি তাকে যেন বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। সেইসঙ্গে তার কবরটি যেন শুধুমাত্র তার জন্যই বরাদ্দ করা হয়। লোকে যেন খুব সহজেই বাবার কবরটি শনাক্ত করতে পারে।’
তিনি বলেন, এই দেশ আমার বাবাকে অনেক কিছু দিয়েছে। অনেক স্বীকৃতি তিনি পেয়েছেন। দেশের মানুষ তাকে ভালোবেসেছে হৃদয় দিয়ে। তার তো আর কোনো কিছু চাওয়া পাওয়ার নেই কারো কাছে। তার ছেলে হিসেবে আমি দেশ ও দেশের সরকারের কাছে আমার বাবার জন্য স্থায়ী একটা কবর চাই।’
প্রসঙ্গত, অনেকদিন ধরেই হার্টের অসুখে ভুগছিলেন কিংবদন্তি সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। অবশেষে হার্ট অ্যাটাকেই জীবনের অবসান ঘটলো তার।
Advertisement
এই শিল্পীর ব্যক্তিগত সহকারী রোজেন জানান, ভোর সোয়া ৪টার দিকে বাসাতেই মারা গেছেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল।
এলএ/জেআইএম