পঞ্চাশ গজ দূরেই ওপারে ভারতের কাঁটাতারের বেড়া। পাশেই সবুজ বেষ্টনীঘেরা যশোরের শার্শা উপজেলার লক্ষ্মণপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রাম। সীমান্তঘেঁষা বেনাপোল থেকে ১০ কিলোমিটার উত্তরে। বায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে মাঘের হাড় কাঁপানো শীতে বিভিন্ন প্রজাতির দেশি-বিদেশি পরিযায়ী অতিথি পাখির আগমনে মুখরিত শার্শার পদ্মবিল।
Advertisement
এই বিলে নিরাপদ আশ্রয় গড়ে তুলেছে অতিথি পাখিরা। পুরো শীতকাল এখানেই কাটিয়ে দেবে তারা। তাদের দেখে মনে হয়, যেন অতিথি পাখির মেলা বসেছে। তাদের কলতানে মুখর এই বিল।
দুর্গাপুর গ্রামের পাশেই প্রায় ৭০ বিঘা জমির জলাশয় নিয়ে পদ্মবিল। পদ্মবিলে হরেক রকম পাখির অভয়ারণ্য। নিরিবিলি মনোরম পরিবেশে গড়ে ওঠা অভয়ারণ্যে পাখির কলতানে মুখরিত গোটা এলাকা।
জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন শতশত পাখিপ্রেমী ভিড় করছেন পদ্মবিলে। উপভোগ করছেন প্রাকৃতিক দৃশ্য। নিরাপদ ও এলাকাবাসীর কড়া নজরদারি থাকায় সবুজ বেষ্টনীঘেরা জলাশয় পাখির কলতানে মুখর।
Advertisement
দর্শনার্থী আব্দুল জববার ও আলী হোসেন বলেন, সরাইল, পানকৌড়ি, ডংকুর, বেগ ও কাসতেচুঁড়াসহ অসংখ্য পাখি এখন জলাশয়ে। উড়ছে তারা আকাশ নীড়ে। পাখির কিচিরমিচিরে মুখরিত পদ্মবিল। দেশ-বিদেশ ও বিভিন্ন স্থান থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে আসছে অতিথি পাখি। দেখছে সবাই প্রাণভরে, মন জুড়াচ্ছে ঘুরেফিরে। গ্রাম ও শহর থেকে আসছে মানুষ অতিথি পাখির অভয়ারণ্যে। প্রকৃতির দৃশ্য ও পাখির আওয়াজ শুনছে তারা প্রাণখুলে। শিশু যেমন মাতৃক্রোড়ে সুন্দর তেমনি পাখি সুন্দর নির্জন জলাশয়ে। এই অভয়ারণ্যে এসে পুলকিত সবাই।
দুর্গাপুর গ্রামের মনির হোসেন ও মোহম্মাদ আলী বলেন, অতিথি পাখিগুলো কেউ যাতে ফাঁদ পেতে ধরতে না পারে তার জন্য সজাগ গ্রামের মানুষ। নাজুক যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে পর্যটকদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বেশ।
এই গ্রামের শামিম হোসেন ও আরমান আলী বলেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা যদি এসব পাখির খোঁজখবর নিতেন তাহলে আরও বেশি পাখি এখানে আসতো।
শার্শা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জয়দেব কুমার সিংহ বলেন, শীতে বিভিন্ন দেশ থেকে অতিথি পাখি আমাদের দেশে আসে। উপজেলায় কয়েকটি স্থানে অতিথি পাখির অভয়ারণ্য গড়ে উঠেছে। অনেক স্থানে পাখি শিকারিরা ফাঁদ ও ইয়ারগান দিয়ে পাখি শিকার করছে। এসব পাখি শিকারিদের আমরা কঠোর নজরদারিতে রাখছি। পরিবেশে যেন বিরূপ প্রভাব না পড়ে তার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। পদ্মবিলসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাখি সংরক্ষণে কাজ করে যাচ্ছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ।
Advertisement
জামাল হোসেন/এএম/এমএস