দেশজুড়ে

স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার সংযোজিত কচ্ছপ উদ্ধার

সুন্দরবনের বিরল প্রজাতির একটি কচ্ছপ ‘বাটাগুর বাসকা’ স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার স্থাপন করে বঙ্গোপসাগরে ছেড়ে দেয়ার পর জেলের জালে আটকাপড়ে। পরে সেটি বিক্রির সময় উদ্ধার করা হয়েছে।

Advertisement

বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার মিঠাখালী এলাকার পুটিমারী খালে এক জেলের জালে আটকে পড়া কচ্ছপটি সোমবার দুপুরে শহরের প্রধান মাছ বাজারে বিক্রির জন্য নেয়া হলে সুন্দরবনের করমজল বাটাগুর বাসকা প্রজেক্টের স্টেশন ম্যানেজার আ. রব ও বন বিভাগের সদস্যরা সেটিকে উদ্ধার করে।

উদ্ধার হওয়া ৪০ বছরের এ বাটাগুর বাসকাটির ওজন সাড়ে ১২ কেজি। ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর এ কচ্ছপটি বঙ্গোপসাগরের মোহনার কালিরচরের সুন্দরবনের ৪৩ নম্বর কম্পাটমেন্ট এলাকায় ছাড়া হয়েছিল।

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণি প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. আজাদ কবির ও বাটাগুর বাসকা প্রজেক্টের স্টেশন ম্যানেজার আ. রব জানান, মিঠাখালীর পুটিমারী খালে সোমবার সকালে বোবা এক জেলে মাছ ধরছিল। এ সময় ওই জেলের জালে এ কচ্ছপটি (বাটাগুর বাসকাা) ধরা পড়ে। ওই জেলে কচ্ছপটিকে মেরে ফেলার চেষ্টাকালে অপর জেলে বোরহান তার কাছ থেকে কচ্ছপটি ছাড়িয়ে নেয়। বোরহান দুপুরে মিঠাখালী বাজারের মাছ ব্যবসায়ী আবুল হোসেনের কাছে ১ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। দুপুরে আবুল হোসেন কচ্ছপটি নিয়ে মোংলা পৌর শহরের প্রধান মাছ বাজারে বিক্রি করতে আসেন। কচ্ছপটির পিঠের উপর স্যাটেলাইট জিপিএস ট্রাকিং ট্রান্সমিটার বসানো দেখে সেটি কেউ না কিনে তারা দ্রুত সুন্দরবন বিভাগকে খবর দেয়।

Advertisement

পরে খবর পেয়ে বন বিভাগের সদস্যদের নিয়ে বাটাগুর বাসকা প্রজেক্ট ম্যানেজার আ. রব বিক্রি করতে আসা আবুল হোসেনকে ১ হাজার টাকা দিয়ে কচ্ছপটি ছাড়িয়ে নিয়ে যান।

বাটাগুর বাসকা’র প্রজেক্ট ম্যানেজার আ. রব বলেন, ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর এ কচ্ছপটি বঙ্গোপসাগরের মোহনার কালিরচরের সুন্দরবনের ৪৩ নম্বর কম্পাটমেন্ট এলাকায় ছাড়া হয়েছিল। স্যাটেলাইট জিপিএস ট্রাকিং ট্রান্সমিটার সিস্টেম সংযোজিত এ বাটাগুর বাসকা ছাড়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল এর বিচরণ ক্ষেত্র, স্বভাব, পানির উপরে রোদ পোহানো ও পানির নিচের অবস্থান নির্ণয়সহ প্রজনন ক্ষেত্র সম্পর্কে গবেষণার তথ্য সংগ্রহ। এ পর্যন্ত দুই দফায় এমন ৫টি কচ্ছপ বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবনে নদীতে ছাড়া হয়েছে। আর এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা জু, টিএসএ আমেরিকা ও বাংলাদেশ বন বিভাগ। বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজলে এ প্রজেক্টের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে।

এছাড়া স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পাওয়া তথ্যাদি সংগ্রহ করা হয়ে তাকে দেশ-বিদেশের কন্ট্রোল রুম থেকেই।

তিনি আরও বলেন, এ প্রজেক্টের মূল উদ্দেশ্য হলো বিরল প্রজাতির বাটাগুর বাসকা কচ্ছপের প্রজনন বৃদ্ধির মাধ্যমে এর বংশ বিস্তার করা।

Advertisement

শওকত আলী বাবু/এমএএস/এমএস/এসজি