বিপিএলের এবারের আসরে আজকের আগ পর্যন্ত ২২টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়ে গেছে। অনেক বড় বড় ইনিংসও খেলা হয়েছে। এমনকি একটি ম্যাচে ২০০ প্লাস রানও হয়ে গেছে। কিন্তু ২৬-২৭টা হাফ সেঞ্চুরি হয়ে গেলেও কোনো ব্যাটসম্যান তিন অংকের ঘর স্পর্শ করতে পারেননি। সর্বশেষ সাব্বির রহমান সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে তুললেও তাকে থেমে যেতে হয়েছিল ৮৫ রানে। যেটা ছিল এবারের আসরের সর্বোচ্চ স্কোর।
Advertisement
তবে, সেঞ্চুরির আক্ষেপ এবার ঘুচিয়ে দিলেন ইংলিশ ব্যাটসম্যান লরি ইভান্স। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বিপিএলের এবারের আসরে প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন রাজশাহী কিংসের এই ব্যাটসম্যান। ৬২ বলে ১০৪ রানে অপরাজিত থাকেন লরি ইভান্স। ৯টি বাউন্ডারির সঙ্গে ছক্কার মার মারেন ৬টি। অর্থ্যাৎ ৭২ রানই করেন তিনি বাউন্ডারি থেকে।
লরি ইভান্স এমন একটি দলের ব্যাটসম্যান, যারা এবারের বিপিএলে ব্যাটিং নিয়েই সবচেয়ে বেশি ভুগছিলো। রাজশাহী কিংস ৩টি ম্যাচে জয় পেয়েছে ঠিক; কিন্তু সেই তিনটি ম্যাচে দলকে জিতিয়েছে বোলাররা। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার কারণেই হারতে হয়েছিল বাকি তিনটি ম্যাচ।
লরি ইভান্স আগের ৬ ম্যাচের মধ্যে ৫টিতেই ছিলেন রাজশাহীর সেরা একাদশে; কিন্তু চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছিলেন আগের ম্যাচগুলোতে। ওই ৫ ম্যাচে তার সর্বোচ্চ রান ছিল ১০। দুটিতে মেরেছিলেন শূন্য। একটিতে ২ এবং অন্যটিতে ১। যে কারণে সিলেটে ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে দলেই রাখা হয়নি লরি ইভান্সকে।
Advertisement
অথচ সেই ইভান্সই কি না পরের ম্যাচে, অর্থ্যাৎ ঢাকায় ফিরে একাদশে সুযোগ পেয়েই নিজেকে বাদ দেয়ার সব এক সঙ্গে ঝেড়ে দিলেন। বাদ পড়ার ক্ষোভ থেকেও হয়তো ফর্মে ফেরার তাগিদটাই তার কাছে ছিল সবচেয়ে বেশি। বিদেশি ক্রিকেটার হিসেবে লরি ইভান্সদের কাছে ফ্রাঞ্চাইজিগুলোর যে প্রত্যাশা থাকে, সেটা পূরণ করার একটা তাগিদও হয়তো ছিল তার মধ্যে। সেই তাগিদ থেকেই দলে ফিরে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি উপহার দিলেন ইভান্স।
শাহরিয়ার নাফিসের সঙ্গে ইনিংস ওপেন করতে নামেন ইভান্স। ৫ রান করে তিনি আউট হয়ে যান। এরপর ব্যাট করতে নেমে কোনো রান না করেই ফিরে যান মেহেদী হাসান মিরাজ। মার্শাল আইয়ুব আউট হয়ে যান মাত্র ২ রান করে।
২৮ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে যখন রাজশাহী ধুঁকছে তখন দলটির হাল ধরেন দুই বিদেশি ব্যাটসম্যান লরি ইভান্স এবং রায়ান টেন ডেসকাট। দু’জনের ব্যাটে গড়ে ওঠে ১৪৮ রানের বিশাল এক জুটি। যা এবারের বিপিএলে সবচেয়ে বড় জুটি। শেষ পর্যন্ত স্কোরবোর্ডে ১৭৬ রান তুলে তবেই মাঠ ছাড়ে ইভান্স এবং ডেসকাট।
লরি ইভান্স ১০৪ রানে অপরাজিত থাকার সঙ্গে অপরাজিত ছিলেন ডেসকাটও। ৪১ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ৫৯ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। ২টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৩টি ছক্কার মার মারেন তিনি।
Advertisement
বিপিএলে লরি ইভান্স একটা রেকর্ডও গড়লেন। এটাই তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরি। একই সঙ্গে ক্রিস গেইলের পর সবচেয়ে বেশি বয়সি (৩১ বছর ৩ মাস ১০ দিন) ক্রিকেটার হিসেবে বিপিএলে সেঞ্চুরি করলেন তিনি। আর বিপিএলের ইতিহাসের এ নিয়ে ১৩তম সেঞ্চুরির রেকর্ড হলো।
আইএইচএস/এমএস