শেষ পর্যন্ত রক্ষা পেলো না গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের চর গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি। ব্রহ্মপুত্র নদের কড়াল গ্রাসে ভবনটি নিলামে বিক্রি করতে বাধ্য হলো কর্তৃপক্ষ। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টির ফলে ব্রহ্মপুত্রে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। ভাঙতে ভাঙতে ব্রহ্মপুত্র নদ একেবারে কাছে চলে আসায় বাধ্য হয়ে উপজেলা প্রশাসন সামান্য কিছু টাকায় ভবনটি সোমবার দুপুরে নিলামে বিক্রি করে দিয়েছেন।যমুনা-ব্রহ্মপুত্রের কুলবর্তী হওয়ায় গাইাবন্ধার সাঘাটা উপজেলার বেশকিছু এলাকা অনেক ভাঙন প্রবণ। ভাঙতে ভাঙতে গোটা হলদিয়া ইউনিয়নের মানচিত্র বদলে গেছে। প্রতিবছরই অসংখ্য বাড়িঘর, আবাদি জমি, গাছপালা ভেঙে যাচ্ছে। সব হারা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। ভাঙন ঠেকানোর জন্য পাউবো ও জন প্রতিনিধিদের কোনো উদ্যোগ না থাকায় ক্ষোভের শেষ নেই এলাকাবাসীর। বিদ্যালয় ভবনটি নিলামে দেওয়ায় এলাকার শোকাহত শিক্ষার্থী অভিভাবকরা সন্তানদের শিক্ষা জীবন নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন। বিশেষ করে মেয়ে শিশুদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। কারণ অভিভাবকরা দূর-দুরান্তের স্কুলে মেয়েদের পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন। হলদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, এলাকাবাসীর ভাঙন প্রতিরোধের দাবি দীর্ঘ দিনের। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড, উপজেলা ও জেলা প্রশাসন এবং জন প্রতিনিধিরা উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ভাঙনের হাত থেকে মুক্তি মিলছে না। সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল আউয়াল জাগো নিউজকে জানান, ২০০৬-৭ সালে বিদ্যালয় ভবনটি নির্মিত হয়। তখন এমন পরিস্থিতি ছিল না। মাত্র কয়েক বছরে ১১ লাখ ৩৫ হাজার টাকায় নির্মিত বিদ্যালয় ভবনটি নদের গর্ভে বিলীন হওয়ার উপক্রম। তাই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলামের মাধ্যমে ১ লাখ ৩১ হাজার টাকায় ভবনটি বিক্রি করে দেওয়া হল। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গ্রহীতা ভেঙে নেবেন। গত জুনে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্কুলটি ভাঙনের হাত থেকে রক্ষায় ১০ লাখ টাকা ব্যায় করেও লাভ হয়নি। তিনি বলেন, আশপাশের কোনো এলাকায় যত দ্রুত সম্ভব টিন শেডের একটি স্কুল ঘর করে দেওয়া হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, এ মুহূর্তে হলদিয়া ইউনিয়নের গোবিন্দপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষে কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। অমিত দাশ/এমজেড
Advertisement