নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে আদালতে হাজিরা করার জন্য সোমবার (২১ জানুয়ারি) দিন ধার্য রয়েছে। এদিন পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে মামলাটির অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে।
Advertisement
এর আগে ১৩ জানুয়ারি ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক এ দিন ধার্য করেন। ওই দিন মামলাটির অভিযোগ গঠন শুনানির দিন ধার্য ছিল। বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে বেলা ১টা ৫৫ মিনিটে খালেদা জিয়াকে ফের কারাগারে নেয়া হয়।
এ সময় ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ তার নিজের পক্ষে শুনানি শুরু করেন। এরপর তিনি আজকের জন্য শুনানি শেষ করার আবেদন করেন। আদালত তার আবেদন মঞ্জুর করেন। এরপর আসামি গিয়াস উদ্দিন মামুন, সেলিম ভূঁইয়ার পক্ষে তাদের আইনজীবীরা অভিযোগ শুনানি করেন। এছাড়াও আসামি এম ইউছুফ নিজের পক্ষে শুনানি করেন।
শুনানিতে তিনি বলেন, ‘ভুয়া মামলায় আজ আমি আসামি হয়েছি। মামলায় আসামি হওয়ার কারণে আমার পেনশন বন্ধ হয়ে আছে। আমার ছেলে-মেয়ে ও সংসারের খরচ চালাতে কষ্ট হচ্ছে। আমি আপনার কাছে এ মামলার দায় থেকে অব্যাহতি চাচ্ছি।’
Advertisement
এরপর আদালত পরবর্তী অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য আগামী ২১ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। অপরদিকে ব্যারিস্টার মওদুদের একটি আবেদনের শুনানির জন্য ১৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় নাইকো দুর্নীতি মামলাটি করেন।
মামলা করার পরের বছর ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। পরে আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ এইচ সেলিম এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
Advertisement
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দুদকের দায়ের করা দুই মামলায় ১০ ও ৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। আপিলে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের কারাদণ্ড বেড়ে ১০ বছর এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিশেষ আদালতে ৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন তিনি।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার পর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী রয়েছেন খালেদা জিয়া।
জেএ/এনডিএস/জেআইএম/ এসজি