দেশজুড়ে

এক শিফটের শিক্ষকেই চলছে দুই শিফট

দীর্ঘ প্রায় ৯ বছর যাবৎ এক শিফটের শিক্ষক দিয়ে দুই শিফট চলছে ফেনীর অন্যতম প্রধান দুটি সরকারি স্কুলের। যার প্রভাব পড়ছে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলে। এ নিয়ে হতাশ অভিভাবকরা। এছাড়া ক্লাসে স্থান সংকুলান না হওয়ায় গাদাগাদি করে বসে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা।

Advertisement

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ফেনী শহরের অন্যতম প্রধান দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফেনী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। ২০০৯ সালে প্রভাতী ও দিবা শাখা চালু হয় বিদ্যালয় দুটিতে। দীর্ঘ ৯ বছর অতিক্রান্ত হলেও এ দুটি স্কুলে দুই শিফটের জন্য শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি। প্রতি শিফটে ২৬ জন করে ৫২ জন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও এক শিফটের শিক্ষক দিয়েই কোনোমতে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

১৮৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ফেনী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়। এ স্কুলে ২০টি শাখায় বর্তমানে ১ হাজার ৬৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। মাত্র ২৬ জন শিক্ষক দিবা ও প্রভাতী দুটি শিফটে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন।

একইভাবে ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২৪টি শাখায় ২ হাজার ছাত্রী রয়েছে। এখানেও প্রভাতী ও দিবা দুটি শিফটে কার্যক্রম ২৫ জন শিক্ষক দিয়ে চালানো হচ্ছে।

Advertisement

শিক্ষক স্বল্পতা ও অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে বিগত কয়েক বছর ধরে পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল সন্তোষজনক হচ্ছে না বলে স্বীকার করছেন স্কুলের শিক্ষকরাও। পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় মানসম্পন্ন লেখাপড়াও হচ্ছে না। সন্তানদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে প্রাইভেট ও কোচিং সেন্টারের দিকে ঝুঁকছেন অভিভাবকরা।

ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে আসা এক অভিভাবক জানান, স্কুল কর্তৃপক্ষ মর্নিং শিফট ও ডে শিফটের জন্য আলাদা শিক্ষক রাখলে আমাদের বাইরের শিক্ষকের দরকার হয় না। মেয়ের জন্য বাসায় একাধিক শিক্ষক রাখতে হয়েছে। এতে অনেক টাকা বাড়তি গুনতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে ফেনী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হোসনে আরা বেগম বলেন, ২৬ জন শিক্ষক দিয়ে আমাদের ২০টি শাখা চালাতে হচ্ছে। এতে করে ছাত্ররা যা পাওয়ার সেটা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। একটি নতুন ভবন অনুমোদন হয়েছে। এটি হলে স্থান সংকুলানের সমস্যা আর থাকবে না।

ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুব্রত নাথ জানান, চাহিদা মোতাবেক শিক্ষক পেলে আমরা কাঙ্ক্ষিত পাঠদান করতে পারব। সমস্যার কথা একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

Advertisement

ফেনী জেলা প্রশাসক ও স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, শিক্ষক স্বল্পতার কারণে এ দুটি স্কুলে পাঠদানে সমস্যা হচ্ছে। এ কারণে বিগত কয়েক বছরে ফল বিপর্যয় ঘটেছে। নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হলে এ সঙ্কট কেটে যাবে। পাশাপাশি নতুন ভবন নির্মাণ ও কিছু ভবন সংস্কার করা হলে অবকাঠামোগত যে সমস্যা রয়েছে সেটিও থাকবে না।

রাশেদুল হাসান/এফএ/এমএস