নারীদের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগে ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক কনক সরকারের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে প্রবেশ এবং পড়ানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
Advertisement
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে- ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে অবিলম্বে অধ্যাপক কনক সরকারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো। আপাতত উনি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না। পড়াতেও পারবেন না। আগামী ১৮ জানুয়ারি বৈঠক করে তার বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বলেন, ‘যতদিন না বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে গঠিত কমিটি এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, ততদিন উনি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে পারবেন না। পাঠদানও করতে পারবেন না।’
এই ব্যাপারে অভিযুক্ত অধ্যাপক কনক সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘আমি ওটা মজাচ্ছলে পোস্ট করেছিলাম। পরে কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে ওই পোস্টের স্ক্রিনশট নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ফরওয়ার্ড করে পোস্টটি ভাইরাল করে দেয়। তার ফলেই শুরু হয় এই জনরোষ। কোনো নারীকে আঘাত করার কোনো উদ্দেশ্যই আমার ছিল না।’
Advertisement
তার কথায়, নিজের মতামত তো যে কেউ দিতে পারেন। সুপ্রিম কোর্টের আইনও আছে এই নিয়ে। আমি তো স্রেফ নিজের মতামতটাই দিয়েছিলাম।
কনক সরকারের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নেয়া হবে বলে আগেই জািয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। তিনি বলেছিলেন, ওই অধ্যাপকের মন্তব্যটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গত রোববার ওই অধ্যাপক তার ফেসবুকে একটি পোস্ট করে লেখেন, ‘কুমারী নারীরা হলো সিল করা বোতল বা প্যাকেটের বিস্কুটের মতো।’
তার এই পোস্টটি নিয়ে তুমুল বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তার বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন অনেকেই।
Advertisement
উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বলেন, ‘উনি একজন শিক্ষক। অথচ, তার মন্তব্যটি মোটেই শিক্ষকোচিত নয়। ওই মন্তব্যের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি। নিয়ম মেনেই তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থাগ্রহণ করবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।’
এদিকে ওই অধ্যাপকের এমন মন্তব্যের প্রতিবাদ করেছে ভারতের জাতীয় মহিলা কমিশন। মঙ্গলবার এক টুইটে সংস্থাটি জানায়, তাদের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যার ভিত্তিতে ঘটনাটির তদন্ত করে কড়া ব্যবস্থা নেয়ার আবেদনও করা হয়েছে রাজ্য পুলিশের কাছে।
এ ছাড়া এই মন্তব্যের জন্য পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কমিশনও জবাবদিহি চেয়েছে কনক সরকারের কাছ থেকে।
এমবিআর/পিআর