যশোরের অভয়নগরের সিংগাড়ি গ্রামের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ সবুরা বেগমকে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে স্বামী আব্দুল্লাহকে মৃত্যুদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়েছেন যশোরের একটি আদালত। তবে এ মামলার অপর দুই আসামি আব্দুল্লাহর বাবা ইঞ্জিল সরদার ও মা খাদিজা বেগমকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
Advertisement
বুধবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর (জেলাজজ) বিচারক টিএম মুছা এ রায় দেন। সরকারপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন বিশেষ পিপি এম ইদ্রিস আলী। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আব্দুল্লাহ পলাতক রয়েছেন।
মামলার বিবরণ মতে, অভয়নগরের শুকপাড়া গ্রামের শামছুর রহমানের মেয়ে সবুরা বেগমকে ২০০৭ সালের ১৩ এপ্রিল বিয়ে করেন আব্দুল্লাহ। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই ৪০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করে নির্যাতন শুরু করেন তিনি। এরমধ্যে সবুরা বেগম অন্তঃসত্ত্বা হন। ২০০৮ সালের ৬ জানুয়ারি আব্দুল্লাহ মা-বাবাসহ স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি যান। ওইদিন তারা সবুরার বাবার কাছে যৌতুকের ৪০ হাজার টাকা দাবি করেন। কিন্তু টাকা না পেয়ে সবুরাকে নিয়ে ফিরে আসেন। বাড়িতে নিয়ে সবুরার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন তারা।
একই বছরের ১৫ জানুয়ারি বিকেলে সবুরাকে মারপিট করে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে আগুন দিয়ে বাড়ি থেকে তারা পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা দগ্ধ অবস্থায় সবুরাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। পরদিন সবুরা বেগম হাসপাতালে একটি মৃত সন্তান প্রসব করেন। ২৮ জানুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় সবুরা বেগম মারা যান।
Advertisement
এর আগে ২১ জানুয়ারি যৌতুকের জন্য হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ওই তিনজনকে আসামি করে নিহতের বাবা বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামি আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে মৃত্যুদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশেষ পিপি এম ইদ্রিস আলী।
মিলন রহমান/বিএ
Advertisement